তিন পার্বত্য জেলায় বিক্ষুব্ধ জুম্ম জনতার ডাকা ৭২ ঘণ্টার সড়ক অবরোধে পর্যটন এলাকা সাজেকে প্রায় দেড় হাজার পর্যটক আটকা পড়েছেন। তবে তারা নিরাপদে আছেন এবং বিভিন্ন আবাসিক রিসোর্টে অবস্থান করছেন। এ প্রসঙ্গে রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার নির্বাহী কর্মকতা শিরিন আক্তার জানান, প্রায় ১৫০০ পর্যটক সাজেকে অবস্থান করছেন। তারা নিরাপদে আছেন। পরিস্থিতি ভালো হলে তারা মুভ (চলাচল) করবেন। তিনি আরও জানান, দিঘীনালার ঘটনার পর অবরোধ ঘিরে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় এসব পর্যটকরা আটকা আছেন।
পাহাড়ি-বাঙালি সংঘর্ষ ও চারজন নিহতের ঘটনায় তিন পার্বত্য জেলায় ডাকা ৭২ ঘণ্টার সড়ক অবরোধের গতকাল দ্বিতীয় দিন অতিবাহিত হয়েছে। কর্মসূচির প্রতি সর্বাত্মক সমর্থন জানিয়েছে আঞ্চলিক সংগঠন ইউপিডিএফ। অবরোধের সমর্থনে গতকাল সকালে খাগড়াছড়ি সাজেক সড়ক, পানছড়ি, রামগড় সড়কে টায়ার জ্বালিয়েছেন অবরোধকারীরা।
এদিকে সড়ক অবরোধে সংশ্লিষ্ট এলাকায় পর্যটকবাহী ও ঢাকা-চট্টগ্রাম-ফেনী কুমিল্লা রুটে দূরপাল্লার কোনো ধরনের যানবাহন চলাচল করছে না। একইভাবে খাগড়াছড়ি জেলার সঙ্গে ৯টি উপজেলার সড়ক যোগাযোগও বন্ধ রয়েছে। এতে আটকে পড়া পর্যটকরা কোথাও যেতে পারছেন না। অবরোধের কারণে ঢাকা ও চট্টগ্রামের সঙ্গে পণ্য ও যাত্রীবাহী যানচলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
অন্যদিকে তিন পার্বত্য জেলার উদ্ভূত পরিস্থিতি পরিদর্শনে খাগড়াছড়ি সফর করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের চারজন উপদেষ্টা। স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ ও সুশীল সমাজের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেছেন তারা। সভা থেকে গুজবে কান না দেওয়া ও পাহাড়ি-বাঙালি সবাইকে সম্প্রীতি সৌহার্দের মধ্য দিয়ে মিলিমিশে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন উপদেষ্টারা। এতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে বলে জানা গেছে। যে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা এড়িয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অবরোধের দ্বিতীয় দিনেও সেনাবাহিনী ও পুলিশ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে নিয়োজিত ছিল।
উল্লেখ্য, খাগড়াছড়িতে চুরির অভিযোগে নিহত মামুনের স্ত্রী খাগড়াছড়ি সদর থানায় তিনজনকে আসামি করে মামলা করেছেন। খাগড়াছড়ি সদর থানার ওসি আবদুল বাতেন মৃধা মামলা হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি আরও জানান, খাগড়াছড়িতে নিহত আরও দুজনের পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ এলে এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।