৪ এপ্রিল, ২০২০ ১০:৪৭

মাছ ধরার নৌকায় বৃদ্ধের কোয়ারেন্টাইন

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

মাছ ধরার নৌকায় বৃদ্ধের কোয়ারেন্টাইন

নিরঞ্জন হালদার

করোনাভাইরাস সংক্রমণের আশঙ্কায় এক বৃদ্ধের ঠাঁই হল মাছ ধরার নৌকায়। ৬০ বছর বয়সী ওই বৃদ্ধের নাম নিরঞ্জন হালদার। করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে গত ২৪ মার্চ থেকে ভারত জুড়ে জারি করা হয়েছে লকডাউন। তার কয়েকদিন আগেই নিজের বাড়ি পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার নবদ্বীপের পাবনাপাড়া গ্রাম থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে মালদহ জেলার হবিবপুরের বুলবুলচন্ডী এলাকার এক আত্মীয়ের বাড়ি যান নিরঞ্জন। সেখানে গিয়েই ঘটে বিপত্তি। আত্মীয়ের বাড়ি যাবার পর তিনি সর্দি-কাশি ও জ্বর হয় তার। এর চিকিৎসকের কাছে গেলে তাকে ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টাইন রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়।
 
কিন্তু লকডাউন শুরু হওয়ার কারণে তিনি আর নিজের বাড়িতে ফিরতে পারেননি। ২০০ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে বাড়িতে ফেরার মতো শারীরিক সক্ষমতাও ছিল না তার। 
 
এদিকে আত্মীয়ের বাড়িতেও আলাদা করে থাকার ব্যবস্থা নেই। গ্রামের লোকেরাও করোনা সন্দেহে তাকে গ্রামে থাকতে দিতে নারাজ। তাই শেষ পর্যন্ত উপায় না দেখে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত সংলগ্ন  হবিবপুরের টাঙ্গান নদীর পাড়ে নোঙর করা একটি মাছ ধরার নৌকাকেই কোয়ারেন্টাইনের বেছে নেন তিনি। গত প্রায় এক সপ্তাহ ধরে মালদহেই এক নৌকাতেই কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন তিনি। গোসল থেকে শুরু করে খাওয়া-দাওয়া, বিশ্রাম, ঘুম সবকিছুই নৌকাতেই। এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই মুহূর্তের মধ্যেই তা ভাইরাল হয়ে যায়। আশপাশের বহু মানুষ ওই বৃদ্ধকে দেখতে নদীর পাড়ে ভিড় জমাতে থাকে। বিষয়টি জানাজানা হতেই ওই বৃদ্ধকে সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন হবিবপুরের ব্লক ডেভলপমেন্ট অফিসার (বিডিও)।
 
নিতাই বিশ্বাস নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা জানান ‘করোনার কারণেই আমরা নিরঞ্জন হালদারকে আলাদা করে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। 
 
নিরঞ্জন জানান ‘আমি কয়েকদিন জ্বরে ভুগছিলাম, তাই গ্রামের বাসিন্দারা তাদের গ্রামে ঢুকতে দেওয়ার অনুমতি দিচ্ছিলেন না। ফলে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো নৌকাতেই বন্দি রয়েছি।’ তিনি এও বলেন ‘সরকারের তরফে বলা হয়েছে যে বাড়ি ফিরে যেতে আমাকে সবরকম সহায়তা করা হবে। কিন্তু সেটা লকডাউনের সময় শেষ হওয়ার পর।’  
 
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন

সর্বশেষ খবর