৪ এপ্রিল, ২০২০ ১৪:২৬

করোনা মোকাবেলায় ৮৭ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজ প্রণোদনার প্রস্তাব বিএনপির

সমগ্র দেশে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে : ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনা মোকাবেলায় ৮৭ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজ প্রণোদনার প্রস্তাব বিএনপির

চলমান করোনাভাইরাস সংকট মোকাবিলায় জিডিপির তিন শতাংশ অর্থাৎ ৮৭ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজ প্রণোদনা ঘোষণার প্রস্তাব দিয়েছে বিএনপি। আজ শনিবার দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ প্রস্তাব দেন।

এসময় তিনি বলেন, সমগ্র দেশে আজ স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। ইতালির তুলনায় আজ আমাদের দেশে মৃত্যুর হার অনেক বেশি দাঁড়িয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী এই প্রস্তাবনা তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব। বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, সরকারের রোগ পরীক্ষা এবং আক্রান্তের পরিসংখ্যানের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা ও মৃত্যুর সঠিক তথ্য নিয়ে অনেকেই সন্দেহ করছেন। এখন প্রয়োজন পরীক্ষা, পরীক্ষা আর পরীক্ষা।

সংবাদ সম্মেলনে এসময় বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে স্থায়ী কমিটির অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, চলমান করোনা সংকট কেবল জীবনের জন্য ঝুঁকি নয়, অর্থনীতির জন্যও তা মারাত্মক বিপর্যয় ডেকে আনবে। আর এ জন্য সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়বে সাধারণ খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ। সেজন্য আমরা স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি কতগুলো পদক্ষেপ গ্রহণের প্রস্তাব রাখছি। সরকার এই প্রস্তাবগুলো সদয় বিবেচনার মাধ্যমে বাস্তবায়ন করবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে সরকার কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সেগুলো এই সংকট নিরসনে যথেষ্ট নয়। এ জন্য জিডিপির তিন শতাংশ অর্থাৎ ৮৭ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজ প্রণোদনা ঘোষণার দাবি জানান মির্জা ফখরুল।

বিএনপি মহাসচিব জানান, নিঃসন্দেহে রোগ পরীক্ষার স্বল্পতাই দেশে হিমশীতল মৃত্যুহারের কারণ। প্রতি হাজারে কোরিয়া যেখানে টেস্ট করেছে ৬ জন, সেখানে বাংলাদেশ প্রতি ১০ লক্ষে টেস্ট করেছে মাত্র ৬ জন। এটা কি উদাসীনতা না উদ্দেশ্যে প্রণোদিত, তা আমাদের বোধগম্য নয়। এ মহাদুর্যোগের সময় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এ তথ্যের অস্বচ্ছতার কারণে জাতিকে কোন চড়া মূল্য দিতে হয় কিনা সেটাই আশঙ্কা। দেশে বেশিরভাগ মানুষ ঘণ্টার পর ঘণ্টা চেষ্টা করেও হটলাইনে ফোন করে সেবা নিতে ব্যর্থ হচ্ছে,  কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না। এখন পর্যন্ত দেশে করোনা পরীক্ষার কিট নিতান্তই অপ্রতুল। হাসপাতালগুলোতে পিপিই ও পরীক্ষা কিটের অভাবে সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্তদের চিকিৎসা করছে না। এমনকি অন্যান্য রোগে আক্রান্ত রোগীদের হাসপাতালগুলো ভর্তি করছে না। এখন প্রয়োজন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করোনা চিহ্নিত করার জন্য বিপুল পরিমাণে পরীক্ষা কিট ও চিকিৎসক-নার্সদের জন্য পিপিই সরবরাহ নিশ্চিত করা এবং রাজধানী জেলা-উপজেলা পর্যায়ে পর্যাপ্তসংখ্যক প্রাতিষ্ঠানিক করোনা পরীক্ষাকেন্দ্র, সম্পূর্ণ পৃথক কোয়ারেন্টাইন ও আইসোলেশন কেন্দ্র স্থাপন, পর্যাপ্ত আইসিইউ স্থাপন ও ভেন্টিলেটর সরবরাহ, নিরাপদ দূরত্বে সম্পূর্ণ পৃথক হাসপাতাল স্থাপন করা।

তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে বাংলাদেশ করোনার তৃতীয় স্তরে পৌঁছেছে। অর্থাৎ করোনা এখন কমিউনিটি পর্যায়ে সংক্রমিত হওয়া শুরু হয়েছে। তাই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নীতিমালা অনুযায়ী সকলকে আরও সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। মহাবিপদের ঝুঁকি থেকে চিকিৎসক-নার্সদের সুরক্ষা দেয়া রোগ নিরাময়ের পূর্বশর্ত। তাই জরুরি ভিত্তিতে করোনা চিকিৎসার সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে পর্যাপ্ত সংখ্যক পিপিই ও আনুষঙ্গিক টেস্টিং কিট সরবরাহ করতেই হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বারংবার তাগিদ সত্ত্বেও বাংলাদেশ সর্বনিম্ন টেস্টিং দেশের অন্যতম ব্যর্থতা।

বিডি প্রতিদিন/ফারজানা

সর্বশেষ খবর