৪ এপ্রিল, ২০২০ ১৪:৪৪
চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার

করোনায় চট্টগ্রামে জামিনের অপেক্ষায় ৩’শ আসামি

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

করোনায় চট্টগ্রামে জামিনের অপেক্ষায় ৩’শ আসামি

করোনাভাইরাস নিয়ে সারাদেশের মতো চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারেও বন্দিদের মধ্যে বিরাজ করছে আতঙ্ক। নতুন আগত আসামিদের কারাগারের ভিতরে প্রবেশের সময় হ্যান্ডওয়াশ-মাস্কসহ নানা উপকরণ যেমন দেয়া হয়েছে, তেমনি এসব বিতরণ এবং কারাগারে আটক সচেতনতামূলক তৎপরতা নিয়েও নানা প্রশ্ন উঠেছে কারাগার কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। 

দেশে প্রচার-প্রচারণা, মাইকিং, নিরাপদ দূরত্ব বজায় থাকাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করলেও কারাগারে এসব প্রচারণা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সদ্য বের হওয়া আসামিরা। তবে করোনার কারণে বিভিন্ন ক্যাটাগড়িতে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে হাজতী-কয়েদিসহ প্রায় ৩’শ জনকে আসামিকে জামিন দেয়া হতে পারে। এতে সব কিছু যাছাই-বাছাই করে নিদের্শনা পেলেই এসব জামিনের প্রক্রিয়া শুরু করা হবে বলে কারাগার সূত্রে নিশ্চিত করা হয়েছে। ইতিমধ্যে চট্টগ্রাম কারাগারের বিভিন্ন ক্যাটাগরির কয়েদি-হাজতী মিলে পৃথকভাবে ঢাকায় তালিকাও পাঠানো হয়েছে।

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মো. রফিকুল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, করোনা আতঙ্ক কাটাতেই সরকার এ উদ্যোগ নিয়েছে। যাদের অপরাধ লঘু এবং যারা ৬ মাস ধরে সাজা ছাড়াই কারাগারে হাজত বাস করছেন, এমন তালিকা তৈরি করা হয়েছে। ছিনতাইয়ের চেষ্টা, চুরি, হত্যাচেষ্টা ও প্রতারণা এসব অপরাধে অপরাধীদের তালিকাও করা হয়েছে। তবে গুরুত্বর অপরাধী যেমন- হত্যা, মাদক, ধর্ষণ ও ছিনতাইয়ের আসামি, তাদেরকে তালিকার বাইরে রাখা হয়েছে। চট্টগ্রাম থেকেও বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে যাছাই-বাছাই করেই তালিকা তৈরি করা হয়েছে। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সদ্য জামিনপ্রাপ্ত বেশ কজন আসামি ও স্বজনরা বলেন, করোনার মধ্যেও রয়েছে আতংক। করোনা প্রতিরোধে সচেতনতা বা সতর্কতা হিসেবে যেসব বলা হচ্ছে, সেগুলো ঠিক মতো করা হচ্ছে না। তাই দ্রুত জেল থেকে জামিনে বের হতে পারলেই রক্ষা। ভিতরে রয়েছে ধারণক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি আসামিও। জেল সুপারসহ উর্ধতন কর্মকর্তাদের বিষয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন কর্মকাণ্ড নিয়ে। যা নিয়ে আসামি ও স্বজনদের মধ্যে অনেকে মুখও খুলতে পারেন না। তবে একটু সচেতন হলেই বিভিন্ন রহস্য বের হবে বলে জানান স্বজনরা।
 
চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার ও নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, করোনাভাইরাসে (কোভিট-১৯) সারাবিশ্বের মানুষকে আতঙ্কে রেখেছে। সেই আতঙ্ক দেশের কারাগারে থাকা বন্দিদের মধ্যেও রয়েছে। তার ওপর চট্টগ্রাম কারাগারে ধারণক্ষমতার দ্বিগুণেরও বেশিসংখ্যক বন্দি থাকার বিষয়টি আরও বেশি সমস্যায় ফেলে দিয়েছে কারা কর্মকর্তাদের। তাই বন্দিদের করোনা আতঙ্ক কাটাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ বিশেষ জামিনের উদ্যোগ নিয়েছে। লঘু অপরাধে দীর্ঘদিন ধরে হাজত বাস করছেন, প্রথম ধাপে এমন বন্দিদের জামিন দেওয়া হবে। ফলে চট্টগ্রাম কারাগার থেকে প্রায় তিন শতাধিকের মতো বন্দি জামিন পেতে পারেন। তাছাড়া কয়েদি-হাজতী পৃথকভাবে পাঠানো তালিকায় হাজতী-১৫১ জন এবং কয়েদি ১৭০ জনের নামের তালিকা পাঠানো হয়েছে। অন্যদিকে, চট্টগ্রাম কারাগারে কয়েদি বন্দি রয়েছে সাজার মেয়াদ সর্বোচ্চ ৬ মাস অবশিষ্ট আছে এমন কয়েদি বন্দি হচ্ছে ৮৬ জন, লঘু অপরাধে আটক কয়েদি বন্দি-৫২ জন, কারাবিধি ১ম খণ্ডের ৫৬৯ ধারা অনুযায়ী মুক্তিযোগ্য কয়েদি-৫৪ জন, অচল ও অক্ষম এবং গুরুত্বর দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত কয়েদি- ৪ জন, সবোর্চ্চ এক বছরের সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি-১০৬ এবং সবোর্চ্চ ৬ মাসের সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি-৪৭ জন।


বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ

সর্বশেষ খবর