রবিবার, ১৪ জুলাই, ২০১৩ ০০:০০ টা

গৌরনদীতে ১৩ প্রকল্পের ৫৩ লাখ টাকা লুটের অভিযোগ

বরিশালের গৌরনদী উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের ক্ষুদ্র সেচ অবকাঠামো মেরামত ও সংরক্ষণের ১৩টি প্রকল্পের অর্ধকোটি টাকা লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সরকারি বিধিমালা লঙ্ঘন করে সম্পূর্ণ অবৈধ পন্থায় এলজিইডির কতিপয় কর্মকর্তার যোগসাজশে ভুয়া কমিটি জমা দিয়ে সরকারি দলের কতিপয় নেতা প্রকল্পগুলোর বরাদ্দকৃত সমূদয় অর্থ উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ২০১২-২০১৩ অর্থ বছরে ক্ষুদ্র্র সেচ অবকাঠামো মেরামত ও সংরক্ষণ প্রকল্পের আওতায় গৌরনদী উপজেলার মাহিলাড়া, নলচিড়া ও শরিকল ইউনিয়নে ১৩টি প্রকল্প গ্রহণ করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এর প্রাক্কলন ধরা হয় ৫৩ লাখ ৮৯ হাজার টাকা। গৌরনদী উপজেলা সমবায় অফিস সূত্র জানায়, শরিকল, মাহিলাড়া ও নলচিড়া ইউনিয়ন পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির নাম দিয়ে সরকারি এই বরাদ্দের অর্থ লুট করা হয়েছে। মাহিলাড়া ইউনিয়নে ৪০৬ জন, নলচিড়া ইউনিয়নে ৩৮৬ জন এবং শরিকল ইউনিয়নে ২৭০ জনের নাম পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির সদস্যের নাম তালিকায় থাকলেও তারা কেউই এ প্রকল্প সম্পর্কে কিছুই জানেন না। সরকারি দলের কতিপয় নেতা মনগড়া নাম দিয়ে ভুয়া সংগঠন দেখিয়ে প্রকল্প তৈরি করেন। তারা অবৈধ পন্থায় কমিটি গঠন করে লোক দেখানো কাজ করে প্রকল্পের নামে বরাদ্দকৃত টাকার বেশিরভাগ আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মাহিলাড়া ইউনিয়নের বেজহার ও মধ্য বেজহার খাল খনন কাজ করেছেন মাহিলাড়া পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির কথিত সভাপতি ও মাহিলাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, যুবলীগ নেতা ও মাহিলাড়া ইউপি সদস্য কামাল হোসেন। স্থানীয়দের অভিযোগ আনোয়ার ও কামাল খালের মাটি না কেটে খালের ঢাল ও পাড় কোদাল দিয়ে পরিষ্কার করে (সেচে) কাগজপত্রে বাস্তবায়ন দেখিয়ে প্রকল্পের বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাৎ করেন। তবে আনোয়ার হোসেন ও কামাল হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তারা কোনো অনিয়ম করেননি। সঠিকভাবেই প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে। একই প্রকল্পের উত্তর বেজহার খাল খনন ও কাসেমাবাদ খাল খননের কাজের প্রকল্প বাস্থবায়ন করেছেন উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আল আমিন, খোকন মল্লিক, জামাল হোসেন, মুন্না খলিফা, সেলিম মৃধা ও লাভলু। সেখানেও একই চিত্র। এ প্রকল্পের দায়িত্ব থাকা আল আমিন, খোকন মল্লিকসহ অন্যান্যরা জানান, যাথাযথভাবে খাল খনন করা হয়েছে। একই প্রকল্পের আওতায় নলচিড়া ইউনিয়নের পিঙ্গলাকাঠী, কুতুবপুর, হাজীপাড়া, দক্ষিণ পিঙ্গলাকাঠী, বাসুদেবপাড়ায় ৫টি স্লুইচগেট সংস্কার প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছেন নলচিড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি এইচ এম শাহজাহান কবির, সুশীল করাতিসহ কতিপয় নেতা। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, স্লুইচগেটগুলো মেরামতের নামে এর সমূদয় বরাদ্দ লুট করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতা শাহজাহান কবীর ও সুশীল করাতি অবশ্য এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর