রবিবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৩ ০০:০০ টা

সমঝোতা না হলে তৃতীয় শক্তির আশঙ্কা

সমঝোতা না হলে তৃতীয় শক্তির আশঙ্কা

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রধান রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির মধ্যে সমঝোতা না হলে তৃতীয় শক্তির হস্তক্ষেপ আশঙ্কা করছেন বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ। গতকাল রংপুরে অনুষ্ঠিত বিবিসি বাংলাদেশ সংলাপ অনুষ্ঠানে দর্শক ও প্যানেল সদস্যদের বক্তব্য থেকে এই আশঙ্কা উঠে এসেছে। তারা মনে করেন, দেশ ও জাতির স্বার্থে সমঝোতার মাধ্যমে আগামী সংসদ নির্বাচন হওয়া উচিত। আকবর হোসেনের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে প্যানেল সদস্য হিসেবে অংশ নেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি, বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক উপমন্ত্রী আসাদুল হাবিব দুলু, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মসিউর রহমান রাঙ্গা এবং দেবী চৌধুরানী পল্লী উন্নয়ন কেন্দ্রের প্রোগ্রাম ডাইরেক্টর মোশফেকা রাজ্জাক। দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের মধ্যে সমঝোতা না হলে তৃতীয় শক্তির হস্তক্ষেপ হবে কিনা নির্ধারিত দর্শক তানিয়া পারভীনের এমন প্রশ্নের জবাবে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি বলেন, তৃতীয় শক্তির কোনো সম্ভাবনা দেখছি না। সংবিধানের আলোকেই নির্বাচন হবে। সে নির্বাচনে সব দল অংশ নেবে। কিন্তু বিএনপি সমঝোতায় না এসে দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করলে তার ফলাফল কারো জন্যই মঙ্গল বয়ে আনবে না। তখন তৃতীয় শক্তির উদ্ভব হতে পারে। আসাদুল হাবিব দুলু বলেন, নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় সরকারের দাবি মেনে নির্বাচন না দিলে যে কোনো সময় তৃতীয় শক্তির হস্তক্ষেপ হতে পারে। তবে সমঝোতা হলে সে সম্ভাবনা থাকবে না। মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, সংবিধান জনগণের জন্য। জনগণের প্রয়োজনে সংবিধান সংশোধন করা অসম্ভব কিছু নয়। গণতান্ত্রিক ধারা সমুন্নত রাখতে আওয়ামী লীগ-বিএনপির মধ্যে সমঝোতা জরুরি। এটা হলে ওয়ান-ইলেভেনের মতো তৃতীয় শক্তির হস্তক্ষেপ হবে। তবে মোশফেকা রাজ্জাক মনে করেন, দুই দলই নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। নির্বাচন হবে। সমঝোতাও হবে। তৃতীয় শক্তির হস্তক্ষেপ আসবে বলে মনে হয় না। সমপ্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে জঙ্গি সংগঠনের অপতৎপরতা প্রসঙ্গে দর্শক রাফি আলম বিথির প্রশ্নের জবাবে মোশফেকা রাজ্জাক বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রতিহত এবং জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল হওয়ায় জামায়াত-শিবির বিভিন্ন নামে জঙ্গি তৎপরতা চালাচ্ছে। তবে দেশে জঙ্গিবাদের কোনো অস্তিত্ব নেই। তার মতামতের সঙ্গে একমত পোষণ করেন খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও মসিউর রহমান রাঙ্গা। আর আসাদুল হাবীব দুলু মনে করেন, বহির্বিশ্বের আনুকূল্য পাওয়ার জন্য সরকারই জঙ্গি তৎপরতার নাটক করছে। তবে তিনি বলেন, দেশে জঙ্গি তৎপরতা বাড়ার আশঙ্কা নেই। জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। আগামী নির্বাচনে জাতীয় পার্টি নিয়ামক শক্তি হিসেবে ভূমিকা রাখবে কিনা আবদুল গফুরের এমন প্রশ্নের জবাবে মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, যে যত কথাই বলুক। জাতীয় পার্টিকে ছাড়া কেউই সরকার গঠন করতে পারবে না। আসাদুল হাবীব দুলু জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানকে উদ্দেশ করে বলেন, তিনি হচ্ছেন 'সখি তুমি কার'। তার কথার বিশ্বাসযোগ্যতা নেই। 
তিনি কখন কার হবেন সেটা তিনি নিজেও জানেন না। খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, জাতীয় পার্টি মহাজোটে আছে, থাকবে। মোশফেকা রাজ্জাক বলেন, দুই দলই জাতীয় পার্টিকে পেতে চায়। কিন্তু এই দলটি রংপুর অঞ্চলভিত্তিক। যে কারণে নির্বাচনে দলটি কোনো প্রভাব ফেলতে পারবে না। আদিবাসী কবিরাজ মুর্মুর প্রশ্নে জবাবে অনুষ্ঠানে প্যানেল সদস্য ও দর্শকরা আদিবাসীদের জন্য তাদের ভাষায় শিক্ষা ব্যবস্থা চালুর পক্ষে মতামত দেন। 
বিকাল সাড়ে ৫টায় রংপুর জিলা স্কুল অডিটরিয়ামে বিবিসি বাংলাদেশ সংলাপের ৩৮তম পর্ব শুরু হয়। বিবিসি মিডিয়া অ্যাকশন এবং বিবিসি বাংলা যৌথভাবে অনুষ্ঠানটি পরিচালিত হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর