বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন, ২০১৪ ০০:০০ টা

দাওয়াতপত্রে সাংসদের নাম না থাকায় ভাংচুর, আহত ১০

দাওয়াতপত্রে সাংসদের নাম না থাকায় ভাংচুর, আহত ১০

পল্লী উন্নয়ন একাডেমীর (আরডিএ) ৪০ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর অনুষ্ঠানের দাওয়াত পত্রে স্থানীয় সংসদ সদস্যের নাম না থাকায় বিক্ষোভ ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ অভিযান চালিয়ে এক আওয়ামী লীগ নেতাকে গ্রেফতার করেছে। এ ঘটনায় কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছে।

এদিকে আরডিএ প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর কর্মসূচি সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে।

জানাগেছে, আজ পল্লী উন্নয়ন একাডেমীর ৪০ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আরডিএ কর্তৃপক্ষ দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানের প্রথম দিনে আজ সকাল ১০ টায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী মসিউর রহমান রাঙ্গাকে প্রধান অতিথি করে আমন্ত্রণ পত্র ছাপানো হয় কয়েকদিন আগে। ওই আমন্ত্রন পত্রে স্থানীয় সরকার দলীয় এমপি আলহাজ্ব হাবিবর রহমানের নাম বিশেষ অতিথি হিসেবে না থাকায় তিনি ক্ষুদ্ধ হন।

এ কারনে শেরপুর উপজেলার গাড়িদহ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ প্রতিমন্ত্রীকে কালো পতাকা প্রদর্শন ও আরডিএ'র সামনে কালোপতাকা মিছিলের কর্মসূচী ঘোষনা করে। বুধবার রাতেই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি প্রতিমন্ত্রী মসিউর রহমান রাঙ্গা আরডিএতে পৌছান। আজ সকাল থেকেই আর ডিএ'র সামনে বিপুল সংখ্যক দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এমপি সমর্থিত গাড়িদহ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ, ছাত্র ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা সকাল থেকেই তাদের কর্মসূচী পালন করার প্রস্তুতি নেয়।

এদিকে এমপি বিরোধী উপজেলা আওয়ামী লীগের কিছু নেতাকর্মী কালো পতাকা প্রদশর্ন কর্মসূচী প্রতিহত করতে আরডিএ'র আশেপাশে অবস্থান নেয়। এদিকে অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে আরডিএ'র বাহিরে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি প্রতিমন্ত্রী জানতে পেরে সকাল ১০ টার দিকে ঘরোয়া ভাবে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে কড়া পুলিশ পাহারায় তিনি আরডিএ থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হন।

প্রতিমন্ত্রী চলে যাওয়ার পর এমপি সমর্থিত নেতাকর্মীরা কালো পতাকা মিছিল নিয়ে আরডিএ'র ভিতরে প্রবেশ করার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদেরকে বাধা দেয়। এসময় এমপির পক্ষের নেতাকর্মীরা কালো পতাকা নিয়ে মানববন্ধন করার চেষ্টা করলে দু'পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।

পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে লাঠিচার্জ শুরু করলে উভয় পক্ষ পুলিশের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। ফলে শুরু হয় ত্রিমুখী সংঘর্ষ। সংঘর্ষ চলাকালে আরডিএ'র মুল ফটক এবং নিরাপত্তারক্ষীর কক্ষ ভাংচুর করে বিক্ষুদ্ধ নেতাকর্মীরা। আধাঘন্টা সংঘর্ষ চলাকালে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ১০ জন নেতাকর্মী আহত হয়। এদের মধ্যে ৬ জনকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ সংঘর্ষ চলাকালে গাড়িদহ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক সামছুল হক ঠানডুকে গ্রেফতার করেছে। আহতদের মধ্যে এমপি সমর্থিত ছাত্রলীগ নেতা আব্দুস সাত্তার, নুরে আলম সনি, জাহিদুল ইসলাম জিহাদ, আব্দুল জলিল সুমন, যুবলীগ নেতা ফারায়জুল ইসলামকে শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

বগুড়া আরডিএর ভারপ্রাপ্ত পরিচালক এমএ মতিন জানান, প্রতিমন্ত্রীর দপ্তর থেকে দিক নির্দেশনা দিয়ে ৪০ তম পূর্তি উত্সবের দাওয়াতপত্র তৈরী করা হয়েছে।

শেরপুর-ধুনটের সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান জানান, দুই ধরনের কার্ড ছাপিয়ে আমাকে অসম্মান করা হয়েছে। দাওয়াতপত্রে আমার নাম না দেখতে পেয়ে স্থানীয় কিছু কর্মী সমর্থক বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে। ভাংচুর হয়েছে কিনা আমার জানা নেই। আমি আরডিএতে যাইনি।

বগুড়ার শেরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আলী আহম্মেদ হাশমী জানান, আরডিএর প্রধান ফটকের সামনের অংশ ভাংচুরের অভিযোগে ঠান্ডু মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়েছে। থানায় এ বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।

সর্বশেষ খবর