বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন, ২০১৪ ০০:০০ টা
একরাম চেয়ারম্যান হত্যাকান্ড

গ্রেফতার হয়নি প্রধান পরিকল্পনাকারী আদেলসহ খুনিদের অনেকেই

গ্রেফতার হয়নি প্রধান পরিকল্পনাকারী আদেলসহ খুনিদের অনেকেই

ফেনীর একাডেমি এলাকার বিলাসী সিনেমা হলের সামনে প্রকাশ্যে ফুলগাজী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি একরামুল হককে গুলি করে, কুপিয়ে ও গাড়িসহ পুড়িয়ে ২০ মে হত্যা করে স্ব-দলীয় প্রতিপক্ষও দুর্বৃত্তরা।

হত্যাকান্ডের পর থেকে ফুলগাজীসহ পুরো জেলায় নেমে আসে শোকের ছায়া। ফুলগাজীতে একরাম সমর্থক ও দলীয় নেতা কর্মীরা কয়েক দফা হরতালসহ মানববন্ধন, শোকসভা, গণ-স্বাক্ষর, অবরোধ ও দোয়ার মাহফিলসহ বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করে। এসময় তারা হত্যাকান্ডের নেপথ্য নায়ক, পরিকল্পনাকারী ও খুনিদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবী জানান। ফেনীর পুলিশ সুপার, সদর থানার ওসিকে প্রত্যাহারের দাবীর পাশাপাশি মামলার তদন্তভার সিআইডির কাছে হস্তান্তরের দাবী ও জানান তারা।

দলীয় নেতৃবৃন্দের অভিযোগ : একরামের খুনিরা আজও দলীয় পদ-পদবীতে বহাল রয়েছে। জেলা আওয়ামী লীগ তাদের দল থেকে বহিষ্কার না করে প্রমান করলো তারা হত্যার প্রকৃত বিচার চাননা। হত্যার প্রতিবাদে আন্দোলন করেছি, মিডিয়ার সামনে প্রকাশ্যে বক্তব্য রেখেছি কোন কাজ হয়নি। হত্যাকান্ডের ২৫ দিনের মাথায় ১৫ জুন একরাম হত্যার দায় স্বীকার করা আসামিরাসহ ২১ আসামি আদালতে জামিন প্রার্থনা করার সাহস দেখাচ্ছেন। কোট প্রাঙ্গনে আঙ্গুল প্রদর্শণ করে, বিভিন্ন অঙ্গ ভঙ্গিমা করে তারা সকলকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে বুঝিয়ে দিচ্ছে এই মামলায় তাদের কিছু হবেনা, এসব মন্তব্য ফুলগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের একাধিক নেতা-কর্মীর।

তারা জানান, নেপথ্য নায়ক, পুলিশ সুপার ও সদরের ওসিকে প্রত্যাহারের দাবী জানিয়ে আমরা আন্দোলন থেকে ব্যাক ফুটে সড়ে আসতে বাধ্য হয়েছি। দলীয় শীর্ষ নেতারাও আমাদের হুমকি দিচ্ছে, সরকারী দল হওয়া সত্বেও পুলিশ প্রশাসনও আমাদের হয়রানি করছে। যারা আন্দোলন সংগ্রাম করেছি খুনিরা এখন জেলে বসে লোক মারফতে তাদের দেখে নেয়ার হুমকি দেখানোর মতো সাহস দেখাচ্ছে।  

তদন্ত কর্মকর্তার বক্তব্য: ফেনী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ও একরাম হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ জানান, এই পর্যন্ত এই মামলায় ২৭জনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। পুলিশ ও র‌্যাব তাদের দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেফতার করেছেন। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ১৫ জন আসামী হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। হত্যার সাথে জড়িত বাকীদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশ সর্বোচ্চ অভিযান অব্যাহত রয়েছে। খুনিদের ব্যাপারে পুলিশ নো-টলারেন্স। প্রধানমন্ত্রী ও পুলিশের উচ্চ পর্যায় থেকে খুনিদের কোন ছাড় না দেয়ার নির্দেশনা রয়েছে।

এদিকে একরাম হত্যামামলার একমাত্র এজহার ভুক্ত আসামি বিএনপি নেতা ও উপজেলা নির্বাচনের একরামের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মাহাতাব উদ্দিন চৌধুরী মিনার ফেনী জেলা কারাগারে থাকা অবস্থায় ৯ জুন হূদরোগে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরবর্তীতে তাকে রাতেই জেলা কারাগার থেকে ফেনী সদর হাসপাতালের মাধ্যমে ঢাকার হূদরোগ ইন্সটিটিউটে ভর্তি করা হয়। একরাম হত্যাকান্ডের রাতেই একরামের বড় ভাই রেজাউল হক জসিম মিনার চৌধুরীকে প্রধান আসামি করে ও অজ্ঞাত ৩৫ জনের বিরুদ্ধে ফেনী মডেল থানায় মামলা দায়ের করে। পরবর্তীতে অবশ্যই তিনি বিভিন্ন গণ-মাধ্যমকে জানান, মামলাটি তিনি স্ব-ইচ্ছায় করেননি। আওয়ামী লীগের চাপে পড়ে তিনি সাদা কাগজে শুধু স্বাক্ষর দিয়েছেলেন।  
 

সর্বশেষ খবর