বুধবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৪ ০০:০০ টা

বগুড়ায় আওয়ামী লীগ অফিসে ককটেল হামলা, আহত ১২

বগুড়ায় আওয়ামী লীগ অফিসে ককটেল হামলা, আহত ১২

বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগ অফিসে ককটেল হামলায় আওয়ামী লীগ নেতা সুলতান মাহমুদ খান রনিসহ ১২ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আজ বুধবার দুপুর সোয়া ২ টায় এ ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণে আহতদের বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এদিকে ককটেল বিষ্ফোরণের ঘটনায় বগুড়া জেলা যুবদলের সভাপতি সিপার আল বখতিয়ারকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে আগামীকাল বৃহস্পতিবার বগুড়ায় অধাবেলা হরতাল আহবান করেছে জেলা বিএনপি।

দলীয় কার্যালয়ে ককটেল হামলার প্রতিবাদে জেলা আওয়ামী লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কিছু কর্মী বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশ করেছে। তারা বগুড়া শহর বিএনপি, শ্রমিকদল ও জেলা বিএনপির কার্যালয়ে ইট পাটকেল ছুঁড়ে মারে। পরে বগুড়া শহরের বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে বিএনপির দলীয় ব্যানারে অগ্নিসংযোগ করে। খবর পেয়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে এবং ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় জেলা যুবদলের সভাপতি সিপার আল বখতিয়ারসহ ১১ জনকে আটক করে।

জানা যায়, আজ সকালে বগুড়া জেলা বিএনপি কেন্দ্রীয় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব তারেক রহমানের কারামুক্ত দিবস উপলক্ষে দেশনায়ক উৎসবের আয়োজন করে। বগুড়া শহরের আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠে অনুষ্ঠিত এ উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। সভাপতিত্ব করেন বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি ভিপি সাইফুল ইসলাম। সমাবেশ শেষে বগুড়া শহরে একটি র‌্যালী বের করে। র‌্যালী শেষে দুপুর ২টায় ঢাকায় বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া ও দলীয় নেতৃবৃন্দের গাড়ীবহরের উপর হামলার প্রতিবাদে বিএনপি ও দলীয় অঙ্গসংগঠন একটি মিছিল বের করে। মিছিলটি শহরের সাতমাথা হয়ে দলীয় কার্যালয়ে ফিরে যাওয়ার কিছু পর শহরের টেম্পল রোডস্থ আওয়ামী লীগ অফিসের গেটের সামনে পরপর ৫ টি ককটের ছুঁড়ে মারে দুর্বৃত্তরা। এরমধ্যে ৩টি ককটেল বিস্ফোরিত হয়। এসময় দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা বগুড়া শহর আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক সুলতান মাহমুদ খান রনি, ছাত্রলীগ নেতা গোলাম হোসেন, আল আমিন, মজনু, মিঠু, মাহফুজার রহমান মাফু, মুক্তা, বাদল, নির্মাণ শ্রমিক নেতা বুলবুল, ও মনছুর, ইমরান, আহত হন। আহতদের স্থানীয়রা উদ্ধার করে বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে ভর্তি করে। এসময় আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনের কয়েকজন কর্মী বিক্ষুব্ধ হয়ে বগুড়া শহর বিএনপি, শ্রমিকদল ও জেলা বিএনপির কার্যালয়ে ইট পাটকেল ছুঁড়ে মারে ও শহরের বিভিন্ন মোড়ে বিএনপির দলীয় ব্যানার ফেস্টুন ভাংচুর-অগ্নিসংযোগ করে। কিছু পরে ককটেল হামলার ঘটনায় জেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগসহ দলীয় অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ একটি বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বগুড়া শহর আওয়ামী লীগের আহবায়ক রাফি নেওয়াজ খান রবিন। বক্তব্য রাখেন জেলা যুবলীগর সাধারণ সম্পাদক সাগর কুমার রায়, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম ডাবলু, জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা জুলফিকার হোসাইন শান্ত, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আল রাজী জুয়েল, সাধারণ সম্পাদক মাশরাফি হিরো প্রমুখ। ওই সমাবেশ থেকে ককটেল হামলায় ১২ নেতাকর্মীকে আহত করার জন্য বগুড়ার বিএনপি নেতাদের দায়ী করা হয়।

এদিকে বিকাল ৪টায় বগুড়া শহরের নবাববাড়ি সড়কস্থ জেলা বিএনপির কার্যালয় থেকে মিছিল করার চেষ্টা করলে বগুড়া জেলা যুবদল সভাপতি সিপার আল বখতিয়ারকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

বগুড়া শহরের সাতমাথা, আওয়ামীলীগ অফিস, বিএনপি অফিসসহ কয়েকটি এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব মমতাজ উদ্দিন জানান, বিএনপির মিছিল থেকে আওয়ামী লীগ অফিস লক্ষ্য করে ককটেল হামলা চালানো হয়েছে। ককটেল হামলায় সুলতান মাহমুদ খান রনিসহ ১২ নেতা কর্মী আহত হয়েছে। এ হামলার জন্য জেলা আওয়ামী লীগ থেকে তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে।

বগুড়া জেলা বিএনপির প্রকাশনা সম্পাদক ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শাহ মেহেদী হাসান হিমু জানান, আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীন কোন্দলের জের ধরে ককটেল হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় বিএনপি এবং অঙ্গসংগঠনের কোন নেতাকর্মী জড়িত নয়। হয়রানী করতে জেলা যুবদলের সভাপতি সিপার আল বখতিয়ারকে গ্রেফতার এবং ১০ নেতা কর্মীকে পুলিশ আটক করেছে। তাদের মুক্তি এবং দলীয় চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার গাড়ীবহরে হামলার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত বগুড়া জেলায় আধাবেলা হরতাল আহবান করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর