সোমবার, ৬ জুলাই, ২০১৫ ০০:০০ টা

পঞ্চগড়ের ৩৬ ছিটমহলে যৌথ জনগণনা শুরু

পঞ্চগড়ের ৩৬  ছিটমহলে যৌথ জনগণনা শুরু

ভারত বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে জনগণনা শুরু হতেই নিজেদের নাম অন্তর্ভুক্ত করার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়ছিলেন ছিটের অধিবাসীরা। ৬৮ বছরের অবরুদ্ধ জীবন থেকে বেরিয়ে এসে এই প্রথম তারা কোন দেশের নাগরিক হিসেবে নিজেদের নাম অর্ন্তভুক্ত করছেন।

আজ সোমবার সকাল থেকেই তাই বিভিন্ন ছিটমহলে আনন্দের আবহ লক্ষ্য করা গেছে। হালকা গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির মধ্যেই প্রত্যেকটি কেন্দ্রেই নিজেদের নাম অর্ন্তভুক্তির জন্য ভীড় করেছেন ছিটবাসীরা। ১০ দিনব্যাপী এই জনগণনা চলবে জেনেও তারা সময় দিতে চান না। সবাই প্রথমে নাম লিপিবদ্ধ করতে চান।
গারাতী ছিটমহলের মোহাম্মদ জমিরুদ্দিন (১০০) জানান, ‘সেই কতদিন আগে মুই ভোট দিছু ফম (মনে) নাই। এলা মহ ভোট দিম বাংলাদেশত। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ মুই দেখিছু। বাংলাদেশেই মোর মরণ হোক। আইজ মোর মনত খুব আনন্দ।’

পঞ্চগড়ের ৩৬টি ছিটমহলে ভারত-বাংলাদেশ সরকরের যৌথ উদ্যোগে জন গণনা শুরু হয়েছে সোমবার সকালেই । বাংলাদেশ ও তুমি যত পারো বিদেশ ঘুরে নাও। আমি  ভারতের প্রতিনিধিরা এই জনগণনা শুরু করেছেন। সদর উপজেলার গারাতী ছিটমহলের ফোরকানীয়া মাদ্রাসা কেন্দ্রে এই জনগণনা শুরু হলে কানা পাড়া গ্রামের অধিবাসীরা নিজেদের নাম অন্তর্ভুক্ত করে। যৌথ গণনায় পঞ্চড়ের ৩৬ ছিটমহলে ১৮টি দল বিভিন্ন ছিটমহলের ১৮টি কেন্দ্রে পর্যায়ক্রমে গণনার কাজ করবে। পঞ্চগড় সদর উপজেলায় ৩টি, বোদা উপজেলায় ৬টি এবং দেবীগঞ্জ উপজেলায় ৯টি কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। ভারত থেকে আসা ৩ জন সুপারভাইজার, ১১ জন গণনাকারী এবং ৪ জন কর্মকতা কর্মকর্তা এই ছিটমহলগুলোতে গণনা কাজে অংশ নিচ্ছেন। প্রত্যেক দলে ভারত ও বাংলাদেশের একজন করে প্রতিনিধি গণনা কাজ পরিচালনা করবেন।

জানা গেছে, ভারত ও বাংলাদেশের যৌথ গণনায় ২০১১ সালের হেড কাউন্টিং-এর বাইরে জন্ম নেয়া শিশু ও বিবাহের মাধ্যমে ছিটমহলে অন্তর্ভুক্ত হওয়া ছিটবাসীদের ছিটমহলবাসী হিসেবে গণনায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। গণনায় যারা দেশ পরিবর্তন করতে চায় তাদেরও তালিকা প্রণয়ন করা হবে। গণনা চলবে আগামী ১৬ জুলাই পর্যন্ত।
ভারতীয় সুপারভাইজার কুচবিহার জেলার দিনহাটা থানার সমিতি একাউন্ট অ্যান্ড অডিট অফিসার শ্রী শ্যামল দত্ত জানান, ‘২০১১ সালের জন গণনাকে মূল ধরেই এই গণনা পরিচালিত হচ্ছে। যারা ভারতে যেতে চায় তাদের মতামত নেয়া হচ্ছে। পরবর্তিতে তদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

২০১১ সালের গণনা মতে ১১ হাজার ৯’শ ৩২ দশমিক ৮০ আয়তনের এসব ছিটমহলের  জনসংখ্যা প্রায় ১৯ হাজার  ৪৩ জন। এর  মধ্যে ১০ হাজার ৯ জন পুরুষ ও ৯ হাজার ৩৪ জন মহিলা বাসিন্দা রয়েছে। ওই গণনা মতে পঞ্চগড় জেলা এসব ছিটমহলে মোট ৩ হাজার ৯’শ ৮৭ টি খানা রয়েছে। এর হিন্দু সম্প্রদায়ের  ১ হাজার ৩৫ জন বাসিন্দা রয়েছে। নতুন এই গণনায় এই সংখ্যা আরো অনেক বৃদ্ধি পাবে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
 

 

বিডি-প্রতিদিন/ ০৬ জুলাই, ২০১৫/ রশিদা

সর্বশেষ খবর