শুক্রবার, ২৩ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

৮৫ টাকায় বাঁধা জীবন

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি

৮৫ টাকায় বাঁধা জীবন

হবিগঞ্জে নারী চা শ্রমিক - বাংলাদেশ প্রতিদিন

হবিগঞ্জে রয়েছে ২৪টি চা-বাগান। মাধবপুর, চুনারুঘাট, বাহুবল ও নবীগঞ্জ উপজেলায় বাগানগুলোর অবস্থান। অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণ ও বিদেশে রপ্তানির করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে বড় ভ‚মিকা পালন করেছে হবিগঞ্জের এসব চা-বাগান। বাগানগুলোর মূল চালিকাশক্তি হচ্ছেন শ্রমিক। যুগ যুগ ধরে এই বাগানগুলোতে কাজ করা বাঙালি ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি শ্রমিক জীবন মানে নেই কোনো পরিবর্তন। বিভিন্ন নির্বাচনের সময় ভোট-প্রার্থীরা তাদের একটু খোঁজখবর নেন। এভাবে সরকার যায়, সরকার আসে কিন্তু তাদের জীবনধারায় লাগে না পরিবর্তনের ছোঁয়া। চা-বাগানগুলোতে প্রধানত নারীরাই চায়ের কুঁড়ি সংগ্রহের কাজ করে থাকেন। আর কারখানায় কাজ করেন নারী-পুরুষ উভয়ে। সারা দিন চায়ের কুঁড়ি সংগ্রহ বা কারখানায় কাজ করে প্রত্যেক শ্রমিক দৈনিক মজুরি পান ৮৫ টাকা। এ দিয়েই চলে সংসার। এই সামান্য মজুরির টাকা দিয়ে বর্তমান সময় চলা তো দূরের কথা মেটানো সম্ভব হয় না ন্যূনতম নাগরিক-সুবিধা। বাগানগুলোতে নেই উন্নত স্বাস্থ্যসেবা, উচ্চ শিক্ষার ব্যবস্থা। যে কয়টি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে সেগুলোর অবকাঠামো ও শিক্ষার মানও করুণ। নেই পর‌্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানীয় জল। চুনারুঘাট উপজেলার চান্দপুর চা বাগানে শ্রমিক বাতাসী কর্মকার বলেন, ‘আমার চারটি সন্তান। স্বামী অসুস্থ। দৈনিক মজুরি ৮৫ টাকা। এ দিয়ে সংসার চলে না। তাই কাজের ফাঁকে চা বিক্রি করে সংসার চালানোর চেষ্টা করছি।’ বাগান শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জানান, শ্রমিকদের মজুরি বাড়ানোর জন্য তিনি আন্দোলন করে আসছেন। কর্তৃপক্ষ কোনো প্রতিকার করছেন না। বাতাসীর মতো এমন অনেক পরিবার রয়েছে যাদের দিন কাটে অনাহার-অর্ধাহারে। জানা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত চা-শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ছিল ৬৯ টাকা। এর আগে ছিল ৬২, তার আগে ৫৫ টাকা। এখন দৈনিক ৮৫ টাকায় বাঁধা জীবনের হিসাব মেলাতে হয় তাদের। ছুটির দিনে তারা পান না কোনো মজুরি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর