বুধবার, ১০ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা

পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি আইন নিয়ে অসন্তোষ

আজ সকাল-সন্ধ্যা হরতাল

রাঙামাটি প্রতিনিধি

সম্প্রতি পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন (সংশোধন) আইন, ২০১৬-এর খসড়া মন্ত্রিসভায় নীতিগত অনুমোদনের পর পার্বত্যাঞ্চলে বাঙালিদের মধ্যে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। এ আইন বাতিল দাবিতে আজ তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে ৫টি বাঙালিভিত্তিক আঞ্চলিক সংগঠন। আশঙ্কা করা হচ্ছে ভূমি কমিশন ইস্যু নিয়ে আবারও অশান্ত হয়ে উঠতে পারে পাহাড়। সংশ্লিষ্ট তথ্য সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর স্বাক্ষরিত পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির (ঘ) খণ্ডের ৪ নম্বর ধারা বলে ১৯৯৯ সালের ৩ জুন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি আনোয়ারুল হক চৌধুরীকে চেয়ারম্যান করে প্রথম পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন গঠন করা হয়। ২০০১ সালের ১২ জুলাই জাতীয় সংসদে পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি (ল্যান্ড কমিশন) কমিশন আইন-২০০১ পাস হয়। কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির সঙ্গে ভূমি কমিশন আইনে অসঙ্গতি প্রকাশ করে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি নেতা সন্তু লারমা। সে সময় ১৩ দফা প্রস্তাব করে পার্বত্য ভূমি কমিশন আইন সংশোধনের দাবি জানায় জনসংহতি সমিতি। সংগঠনটির দাবির পরিপ্র্রেক্ষিতে গত ১ আগস্ট পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন (সংশোধন) আইনের খসড়া নীতিগত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। এ ব্যাপারে পার্বত্য নাগরিক পরিষদের আহ্বায়ক বেগম নূরজাহান জানান, বাঙালিদের পাশ কাটিয়ে একতরফাভাবে মন্ত্রিপরিষদের নীতিগত অনুমোদিত পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমিবিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইনের সংশোধনী সংসদে পাস করা হলে পাহাড়ে অশান্তির দাবানল ছড়িয়ে পড়বে। পার্বত্যাঞ্চলে যুগ যুগ ধরে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর পাশাপাশি বাঙালিরাও বসবাস করে আসছে। তিন পার্বত্য জেলার এক-তৃতীয়াংশজুড়ে বাঙালিদের বসবাস। শুধু পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এ কমিশন আইন সংশোধনের ফলে পাহাড়ে বসবাসরত সুবিধাবঞ্চিত বাঙালি জনগণের জন্য ন্যায় বিচার অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। পার্বত্য চট্টগ্রাম সম-অধিকার আন্দোলন সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর কামাল জানান, আমরা পার্বত্য চট্টগ্রামের বৃহত্তর বাঙালি জাতিগোষ্ঠীদের স্বার্থে এ আইন প্রত্যাখ্যান করেছি। এ ছাড়া তৎকালীন কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি খাদেমুল ইসলাম চৌধুরী ভূমি বিষয়ে যে সিদ্ধান্তগুলো নিয়েছিলেন, সে বিষয়গুলো বাস্তবায়ন করার দাবি ছিল। কিন্তু জনসংহতি সমিতির ষড়যন্ত্রে ওই সিদ্ধান্তগুলোকে পাস কাটিয়ে এখন যে আইন সংশোধন করা হয়েছে, সে আইনে জনসংহতি সমিতির দাবিগুলো অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তা পার্বত্যাঞ্চলে মানুষ মেনে নিবে না। যত দিন পর্যন্ত এ আইন বাতিল করা হবে না, তত দিন পর্যন্ত আমাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

সর্বশেষ খবর