শুক্রবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

ঈদের পোশাক মাংস নিয়ে ফেরা হলো না!

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া

ঈদের সময় ভালো রোজগারের আশায় রিকশা চালাতে বগুড়া থেকে ঢাকায় গিয়েছিলেন আবদুল জলিল (৪৫)। প্রত্যাশা অনুযায়ী রোজগারও করেছেন। ওই টাকায় পরিবারের সদস্যদের জন্য নতুন কাপড় কিনেছিলেন। অভাবের সংসারে খরচ করার জন্য রোজগার থেকে বাঁচিয়ে রেখেছিলেন চার হাজার টাকা। ঈদের দিন বাসায় বাসায় ঘুরে সংগ্রহ করেছিলেন পাঁচ কেজি গরুর মাংস। কিন্তু এই সামান্য জিনিস নিয়েও বাড়ি ফিরতে পারলেন না আবদুল জলিল। ছিনতাইকারী সব কিছু নিয়ে গেছে। সঙ্গে প্রাণও। ঈদের পরদিন বুধবার ভোরে বগুড়া শহরের দত্তবাড়ি-নামাজগড় সড়কের কাটনারপাড়ায় ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে খুন হন জলিল। তার সঙ্গে থাকা পরিবারের সদস্যদের জন্য কেনা ঈদের পোশাক, কোরবানির মাংস আর চার হাজার টাকা নিয়ে গেছে ছিনতাইকারীরা। জলিল বগুড়ার কাহালু উপজেলার পীরাপাট গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, ঈদের সন্ধ্যায় নৈশকোচে রওনা দিয়েছিলেন বগুড়ার পথে। বুধবার ভোরে বগুড়ার সাতমাথায় বাস থেকে নেমে হেঁটে রওনা দিয়েছিলেন বাড়ির উদ্দেশে। শহরের দত্তবাড়ি-নামাজগড় সড়কের করনেশন ইনস্টিটিউশন অ্যান্ড কলেজের পাশে ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েন তিনি। জলিলের সঙ্গে থাকা জিনিসপত্র কেড়ে নিতে ছিনতাইকারীরা তার বুকে-পিঠে ছুরিকাঘাত করে। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেলে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। জলিলের মেয়েজামাই এমাদুল ইসলাম বলেন, রিকশা চালিয়ে ভালো উপার্জনের আশায় এক সপ্তাহ আগে বাড়ি থেকে ঢাকা গিয়েছিলেন তার শ্বশুর। ঈদের দিন বাড়িতে মুঠোফোনে জানিয়েছিলেন, রিকশা চালিয়ে হাজার চারেক টাকা জমিয়েছেন। পরিবারের সবার জন্য কিনেছেন নতুন কাপড়। বাসাবাড়ি ঘুরে কেজি পাঁচেক মাংসও পেয়েছেন। অথচ এর জন্য তাকে খুন হতে হলো। বগুড়া সদর থানার ওসি আছলাম আলী বলেন, ছিনতাইকারীরা সামান্য কিছু টাকা আর কোরবানির মাংসের জন্যই আবদুল জলিলকে খুন করেছে। ময়নাতদন্ত শেষে তার লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় মেয়েজামাই এমাদুল অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেছেন।

সর্বশেষ খবর