শিরোনাম
মঙ্গলবার, ১১ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

কয়লা ধোওয়া পানিতে ছড়িয়ে পড়ছে নানা রোগ

বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র

দিনাজপুর প্রতিনিধি

চর্মরোগে দুই মাস ধরে আক্রান্ত আট বছরের রিভা। সে দিনাজপুরের ফুলবাড়ীর রজনীগন্ধা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী। রিভার বাবা ইদ্রিস জানান, বাড়িতে পানির ব্যবস্থা না থাকায় মেয়ে কয়েক বন্ধুর সঙ্গে বাড়ির পাশের ডোবায় যেত। সেখান থেকেই তার চুলকানির সংক্রমণ হয়। ইউসুফপুর গ্রামটি বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৪০০ মিটারের মধ্যে অবস্থিত। এলাকাবাসী জানান, বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র সচল রাখতে ১৪টি গভীর পাম্প স্থাপন করা হয়েছে। যেগুলো দিয়ে অনবরত পানি ওঠানোর ফলে ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। এতে আশপাশ এলাকার নলকূপ দিয়ে পানি উঠছে না। ফলে বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে কয়েকটি গ্রামে। অপরদিকে বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহৃত পানি ড্রেনের মাধ্যমে চলে আসে আশপাশের কৃষি জমি ও নদীতে। এ পানি শরীরের লাগলে দেখা দেয় চুলকানিসহ নানা রোগ। কয়লা ধোয়ার পানি নদীতে পড়ে নদীর পানিও দূষিত হচ্ছে। এতে মরছে নদীর মাছ। বিদ্যুৎকেন্দ্র কর্তৃপক্ষের ভাষ্য ‘এখান থেকে কয়লা ধোয়া যে পানি বের হয় তার পরিবেশগত কোনো সমস্যা নেই। বরং এই পানি যে জমিতে পড়ে তার ফসল উৎপাদন অনেকাংশে বৃদ্ধি পায়।’ পার্বতীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নবীউর রহমান জানান, চর্মরোগ-এর বিষয়টি বড় কিছু না। ভয়ের কারণ নেই। মাঠপর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে তারা কাজ করছেন। দিনাজপুরের সিভিল সার্জন ডা. অমলেন্দু বিশ্বাস জানান, পানির সংকট বা দূষিত পানির কারণে স্বাস্থ্যগত সমস্যার কথা তিনি একেবারে জানেন না। যদি সমস্যা থাকে তবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইউসুফপুর গ্রামের রাশেদুল জানান, প্রতিবেশী ইয়াসীনের পরিবারের প্রায় সব সদস্য চর্মরোগে আক্রান্ত। তার তিন ছেলে-মেয়েরও এ রোগ দেখা দিয়েছে। তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে আসা পানি ব্যবহারে এসব রোগ হচ্ছে। তিনি আরও জানান, ইউসুফপুর গ্রাম ছাড়াও পানি সংকট দেখা দিয়েছে বিদ্যুৎ কেন্দে র পার্শ্ববর্তী রামভদ্রপুর, মধ্যরামভদ্রপুর, মধ্যদুর্গাপুর, শেরপুর, উত্তর শেরপুর ও মধ্যমপাড়া, তেলীপাড়া, দুধিপুকুর ও পশ্চিম দুধিপুকুর গ্রামে। দুধিপুকুর গ্রামের বখতিয়ার উদ্দিন ও হাকিম জানান, কয়লা ধোয়া ময়লা পানি তার জমিতে সেচ দেওয়ায় কমে গেছে ফসল উৎপাদন। আবার জমিতে কাজ করতে গেলে দূষিত পানি লেগে চুলকানি হচ্ছে। ফলে শ্রমিকরাও খেতে কাজ করতে চান না।

সর্বশেষ খবর