নরসিংদীর বেলাবো উপজেলার গলগলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঝুঁকিপূর্ণ ভবন যেকোনো সময় ধসে পড়তে পারে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আজ পর্যন্ত নতুন ভবন নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করেননি। নতুন ভবন নির্মিত না হওয়ায় জরাজীর্ণ ভবনেই জীবনবাজি রেখে পড়াশোনা করছে শিশু শিক্ষার্থীরা। বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মোরশেদ মিয়া জানান, একসময়ের নৌ যোগাযোগ সমৃদ্ধ গলগলিয়া গ্রামে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের নেতা কালিপদ চক্রবর্তী ও ভাওয়াল রাজার বংশধর উপেন্দ্র রায়ের প্রচেষ্টায় ১৯৩০ সালে একটি টিনের ঘরে শুরু হয় বিদ্যালয়ের কার্যক্রম। এ প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাথমিক শিক্ষা নিয়ে অনেকে সেনাপ্রধান, সচিব হয়েছেন। অনেকে দেশ-বিদেশে উচ্চ শিখরে অবস্থান করছেন। ১৯৮০ সালে এরশাদ সরকারের শাসনামলে সরকারের খরচে বিদ্যালয়ের একটি ভবন নির্মিত হয়। নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে তৈরি করা ভবনটি নির্মাণের কিছুদিনের মধ্যেই খসে পড়তে থাকে পলেস্তরা ও দরজা-জানালার পার্ট। এরপর ১৯৯৩-৯৪ সালে বিদ্যালয় ভবন পুনর্নির্মাণ করা হয়। কিন্তু ২০১৪ সালে কালবৈশাখী ঝড়ে বিদ্যালয়ের টিনশেড ঘরটি লণ্ড ভণ্ড হয়ে যায়। এরপর থেকে জরাজীর্ণ ভবনের তিনটি কক্ষে দুই পালায় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা চলছে। গলগলিয়া গ্রামের বাসিন্দা গোলাপ মিয়া জানান, তার ছেলে ইফাদ মিয়া ওই স্কুলে পড়ত। একদিন ছাদের পলেস্তরা খসে পড়ে সে আহত হয়। এরপর সে ওই বিদ্যালয়ে যায়নি। জরুরি ভিত্তিতে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ভেঙে নতুন ভবন নির্মিত না হলে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন গ্রামবাসী। বেলাবো উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শামসুল হক বলেন, ‘আমি তিন মাস আগেও গলগলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। এতটা খারাপ অবস্থার কথা আমার জানা নেই। এর আগে একবার কিছুটা মেরামত করা হয়েছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে জানানো হবে।
