শুক্রবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

দিনভর সোনামণিদের ভোটউৎসব

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ‘স্টুডেন্ট কাউন্সিল’

প্রতিদিন ডেস্ক

দিনভর সোনামণিদের ভোটউৎসব

সিরাজগঞ্জ সোনামণিদের ভোট উৎসব —বাংলাদেশ প্রতিদিন

দেশের বিভিন্ন প্রথমিক বিদ্যালয়ে গতকাল অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘স্টুডেন্ট কাউন্সিল’। তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা নির্বাচনে অংশ নেয়। স্কুলগুলোতে ছিল সাজ সাজ রব। সুশৃঙ্খলভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিয়েছেন কোমলমতি শিশুরা।  বিজয়ীরা স্বাস্থ্য, বন ও পরিবেশ বিষয়ক, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, আপ্যায়নসহ সাতটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করবেন। সংশ্লিষ্টদের মত, এ নির্বাচন শিক্ষার্থীদের মধ্যে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ সৃষ্টি করবে। নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের খবর—

খুলনা : বেলা ১১টা। মহানগরীর নজরুল নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বারান্দায় খুদে শিক্ষার্থীর লাইন। ‘স্টুডেন্ট কাউন্সিল’ গঠনে ভোট দেওয়ার অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে সবাই। কোনো বিবাদ নেই, আছে আনন্দ-উল্লাস। খুলনার কয়েকটি বিদ্যালয় ঘুরে এ রকম উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট গ্রহণের দৃশ্য দেখা যায়। শিক্ষা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মহানগরীর ১২৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক সঙ্গে ভোট উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচন কমিশনার, প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করছে শিক্ষার্থীরা। সদর থানা শিক্ষা কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম জানান, এ ভোটউৎসবের মাধ্যমে শিশুকাল থেকে গণতন্ত্র চর্চার অভ্যাস গড়ে উঠবে। লক্ষ্মীপুর : জেলার পাঁচটি উপজেলার ৭৩১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্টুডেন্ট কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত চলে ভোটগ্রহণ। সদর উপজেলার জামিরতলী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায় কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীরা ব্যাপক উৎসাহে নির্বাচন কার্যক্রম চালাচ্ছেন। নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ করতে প্রিজাইডিং, পুলিং কর্মকর্তা, নিরাপত্তার দায়িত্বও পালন করছেন তারা। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল আজিজ জানান, শিশুদের মধ্যে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ সৃষ্টিই নির্বাচনের লক্ষ্য। মৌলভীবাজার : উৎসবমুখর ও আনন্দঘন পরিবেশে জেলার ১ হাজার ৪৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সোনামনিরা ভোট দিয়েছে। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনের আদলে। শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে প্রধান নির্বাচন কমিশন, পোলিং অফিসার, প্রিজাইডিং অফিসার নির্ধারণ করা হয়। প্রার্থীদের অনেকে চকলেট, চানাচুর ও বিস্কুট আপ্যায়ন করেন ভোটারদের। জেলার ভারপ্রাপ্ত প্রাথমিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী আহসান বলেন, এ নির্বাচন শিক্ষার্থীদের মধ্যে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ সৃষ্টি করবে।

সিরাজগঞ্জ : একজন ব্যালট পেপার ছিঁড়ে ভোটারের হাতে তুলে দিচ্ছে। অন্যজন হাতে এঁকে দিচ্ছে কালির ছাপ। লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। জেলা শহরের রেলওয়ে কলোনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এমন দৃশ্য চোখে পড়ে। একই দৃশ্য ছিল জেলার প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও ভোট দিতে পেরে খুশি শিক্ষার্থীরা। অভিভাবক ও শিক্ষকরা বলছেন, এর মাধ্যমে শিশুদের মধ্যে নেতৃত্ব ও গণতান্ত্রিক মনোভাব সৃষ্টি হবে। টাঙ্গাইল : মির্জাপুর উপজেলার ১৮৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সকাল ১০টা থেকে একযোগে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছিল উৎসাহ-উদ্দীপনা। প্রার্থীরা বিদ্যালয় আঙিনায় সাঁটিয়েছে সাদা-কালো ও রঙিন পোস্টার। পৌর সদরের বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয় ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। মির্জাপুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা খলিলুর রহমান বলেন, শিশুদের  মধ্যে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ গড়ে তোলার জন্যই এ নির্বাচন। বাঞ্ছারামপুর : ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাঞ্ছারামপুরের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচন প্রত্যক্ষ করতে শত শত অভিভাবক জড়ো হন বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে। হাতে ভোটার স্লিপ নিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে ক্ষুদে ভোটারদের। ছিল আলাদা বুথ ও সুদৃশ্য ব্যালট বক্স। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সুব্রত কুমার বণিক জানান, শিক্ষার্থী ঝরেপড়া রোধ, শিক্ষার মান বৃদ্ধি ও নেতৃত্বের মনোভাব তৈরি এ ভোটের প্রধান উদ্দেশ্য।

সর্বশেষ খবর