বুধবার, ৪ এপ্রিল, ২০১৮ ০০:০০ টা

ফরিদপুরে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপে সংঘর্ষে এক নারী নিহত

ফরিদপুর প্রতিনিধি

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে মমতাজ বেগম (৫৫) নামের এক নারী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছে কমপক্ষে ১০ জন। আহতদের বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনার পর এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বোয়ালমারী উপজেলার ময়না ইউনিয়নের আমগাছিয়া ডাংগী গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা রুস্তম শেখের সঙ্গে উপজেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম খায়েরের জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছিল। গতকাল সকাল ৮টার দিকে একটি ডোবায় মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে আবুল কালামের সমর্থকরা রুস্তম শেখের গোয়ালঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে দুই পক্ষের মাঝে সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষ থামাতে গেলে রুস্তম শেখের স্ত্রীর বড় বোন মমতাজ বেগমকে প্রতিপক্ষের লোকজন রামদা দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মক আহত করে। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। নিহত মমতাজ বেগম তার বোন মনোয়ারা বেগমের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে খুনের শিকার হন। নিহত মমতাজ বেগম সদর উপজেলার বাখুন্ডা গ্রামের ইউনুস শেখের স্ত্রী। সংঘর্ষের পর পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে। স্থানীয়রা জানান, রুস্তম শেখের সঙ্গে আবুল কালাম খায়েরের জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। এ নিয়ে ২০১১ সালে রুস্তম শেখের চাচাতো ভাই খুন হন আবুল কালাম খায়েরের গ্রুপের হাতে। সে মামলাটি গত বছর মীমাংসা করা হয়। বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমান জানান, ডোবায় মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। মাদারীপুরে ২৫ ঘরে আগুন : মাদারীপুর প্রতিনিধি জানানা, মাদারীপুর সদর উপজেলার কালিকাপুর এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় দুর্বৃত্তরা উভয় গ্রুপের ২৫টি বসতঘরে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেয়। এতে দুই পক্ষের কমপক্ষে দেড় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি ক্ষতিগ্রস্তদের। সোমবার মধ্যরাত থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত এই সংঘর্ষে শতাধিক বোমা বিস্ফোরণ ঘটায় দুর্বৃত্তরা। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আটক করা হয়েছে একজনকে। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে কালিকাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এজাজ আকনের সঙ্গে একই ইউনিয়নের শাহেবালি মাদবরের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। এই দ্বন্দ্বের জের ধরেই সোমবার রাতে উভয় গ্রুপ বিরোধে জড়িয়ে পড়ে। দুর্বৃত্তরা ২৫টি বসতঘরে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।

পরে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় পুলিশ এক যুবককে আটক করেছে। জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও আওয়ামী লীগ নেতা ওবায়দুর রহমান কালু খানের অনুসারী এক গ্রুপের এবং অপর গ্রুপ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পাভেলুর রহমান শফিক খানের অনুসারী।

এ ব্যাপারে মাদারীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. কামরুল হাসান বলেন, এলাকায় বর্তমানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর