বৃহস্পতিবার, ১৯ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা

‘এইবার পদ্মার পেটে জমি জিরাত বেবাগ যাইবো’

ফরিদপুর প্রতিনিধি

‘এইবার পদ্মার পেটে জমি জিরাত বেবাগ যাইবো’

পদ্মার অব্যাহত ভাঙনে বিলীন হচ্ছে চরভদ্রাসনের জনপদ —বাংলাদেশ প্রতিদিন

‘বাজান, এইবার আর বাচুম না, তিনবার ঘর সরাইছি, এইবার ঘর সরানোর জায়গা নাই। পদ্মার হাতে সবকিছু ছাইরা দিছি, যে কোনো সময় পদ্মার পেটে চলে যাইবো সবকিছু। এহন পোলাপান নিয়া জান বাচানোই কষ্ট। আমাগোর দুঃখ দেহনের কেউ নাই। এইবার পদ্মার পেটে জমি জিরাত বেবাগ যাইবো’—কথাগুলো বলছিলেন পদ্মাপাড়ের ফাজেলখাঁর ডাঙ্গী গ্রামের বৃদ্ধ আজমত বেপারী। শুধু আজমতই নয়, একই অবস্থা চরভদ্রাসনের বালিয়াডাঙ্গী, ফাজিলখার ডাঙ্গী, এমপি ডাঙ্গী গ্রামের মানুষের।

জানা যায়, গত এক সপ্তাহে পদ্মার ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে কমপক্ষে ৩০টি বসতবাড়ি, ৫০ বিঘা ফসলি জমি ও বিভিন্ন প্রজাতির কয়েক হাজার গাছ। ভাঙনের কবলে পড়া ৩৫টি ঘর অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ভাঙনের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় বাপ-দাদার ভিটাবাড়ি হারিয়ে অনেকেই হয়ে গেছেন নিঃস্ব। সর্বস্ব হারিয়ে কেউ আত্বীয়-স্বজনদের বাড়িতে কেউ বা সরকারি রাস্তার পাশে আশ্রয় নিয়েছেন। মারাত্মক ভাঙনঝুঁকিতে রয়েছে এমপি ডাঙ্গী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, এমপি ডাঙ্গী মাদ্রাসা, ফাজেলখার ডাঙ্গী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মোল্যা ডাঙ্গী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বেশকটি পাকা মসজিদ, কয়েক কিলোমিটার কাঁচা-পাকা সড়ক ও বেড়িবাঁধ। ভাঙনকবলিত এলাকার মানুষ জানান, শুষ্ক মৌসুমে বার বার ভাঙন ঠেকাতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, পানি উন্নয়ন বোর্ডকে তাগাদা দিয়েও কাজ হয়নি। এমনকি নদীর তীরে কয়েকবার মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। চরভদ্রাসন উপজেলা চেয়ারম্যান বাদল আমিন জানান, দ্রুত ভাঙন ঠেকাতে না পারলে চরভদ্রাসন উপজেলা সদরটি পদ্মায় বিলীন হয়ে যাবে।

দিনাজপুরে ভাঙনের মুখে শত শত ঘরবাড়ি : দিনাজপুর প্রতিনিধি জানান, নবাবগঞ্জ উপজেলায় করতোয়া নদীর ভাঙনে হারিয়ে যেতে বসেছে ফসলি জমিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। ভাঙন কবলিত গ্রামগুলো হল— ভোটারপাড়া, কাঁচদহ, উ. কাঁচদহ, উ. মাঝিপাড়া ও দ. মাঝিপাড়া।

নবাবগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান নূরে আলম সিদ্দিকী জানান, নদী যেভাবে ভাঙছে তাতে শুধু গ্রামগুলো নয়, ড. ওয়াজেদ মিয়া সেতুও হুমকির মুখে পড়তে পারে।

সর্বশেষ খবর