বৃহস্পতিবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

চাঁদা চেয়ে পাহাড়ের ঘরে ঘরে চিঠি

সক্রিয় সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসীরা দিনদুপুরে হামলা-লুট

বান্দরবান প্রতিনিধি

পার্বত্য জেলা বান্দরবানে বেড়েছে চাঁদাবাজি। বিভিন্ন সন্ত্রাসী গ্রুপ চাঁদা চেয়ে বাড়ি বাড়ি চিঠি পাঠাচ্ছে। আবার মোবাইলে ফোন দিয়েও চাঁদা দাবি করে হুমকিধমকি দিচ্ছে। শুধু তাই নয়, লামা উপজেলার মেরাখোলা বাজার ও ছোটবমু এলাকায় গতকাল দল বেঁধে দিনদুপুরে ১৭ দোকানে লুটপাট চালিয়েছে সন্ত্রাসীরা। এ সময় তারা ছয় লাখ টাকার মালামাল লুট করে এবং মিলন নামে এক ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে আহত করে। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে যান। ঘটনার পর থেকে এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। নিরাপত্তার স্বার্থে ওই এলাকায় সেনাক্যাম্প স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন বাসিন্দারা।

 

লামার ছোটবমু ও মেরাখোলা গ্রামে মঙ্গলবার ভোররাতে অস্ত্রসহ হামলা চালায় সস্ত্রাসীরা। খবর পেয়ে সকালে সেনাবাহিনীর টহল দল ঘটনাস্থলে পৌঁছলে হামলাকারীরা গা ঢাকা দেয়। এ দিন দুপুরে নকশাঝিরি এলাকায় নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে সন্ত্রাসীদের গুলিবিনিময় হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। হামলা ও লুটপাটের সত্যতা স্বীকার করে লামা সদর ইউপি চেয়ারম্যান মিন্টু কুমার জানান, তার এলাকার লোকজনের আতঙ্কে দিন কাটছে।

গ্রামবাসী জানান, কয়েক সপ্তাহ ধরে দুর্বৃত্তরা ৮-১০ জন করে বিভক্ত হয়ে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাচ্ছে। লোকালয়ে এসে প্রকাশ্যে দিনের বেলা হামলা-লুটপাট করছে। তাদের ভাষ্য, লামা, নাইক্ষ্যংছড়ি, আলীকদম, রুমা, থানছি উপজেলায় অব্যাহত চাঁদাবাজি, ধর্ষণ, অপহরণে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। বাইশারী ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলম বলেন, ‘সম্প্রতি চাঁদাবাজির ঘটনা বেড়ে গেছে জেলার শিল্পাঞ্চলখ্যাত বাইশারীতে। এখানকার রাবার বাগান মালিকদের কাছে চিঠি দিয়ে ও মোবাইল ফোনে লাখ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করছে। চাঁদা না দিলে মালিকদের বাগানের কাজ করতে দিচ্ছে না। সন্ত্রাসীদের অত্যাচারে কয়েক হাজার রাবার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছে। ভয়ে এলাকার লোকজনের নির্ঘুম রাত কাটছে। স্থানীয় আলীম সওদাগর জানান, শুধু রাবার বাগান মালিক নয়, স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকেও চিঠি দিয়ে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। তাছাড়া সন্ত্রাসীরা প্রতি ঘর থেকে এক হাজার ও দোকান থেকে তিন হাজার টাকা করে চাঁদা চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে। ৭ সেপ্টেম্বরের (কাল) মধ্যে টাকা না দিলে ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেবে বলেও হুমকি দিচ্ছে। লামা থানার ওসি অপ্পেলা রাজু নাহা জানান, জনসাধারণের নিরাপত্তা বিবেচনা করে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। আলীকদম সেনাবাহিনীর জোন কমান্ডার লে. কর্নেল মাহাবুবুর রহমান বলেন, ‘তিন দিকে থেকে সেনাবাহিনী কাজ করছে।’ পুলিশের এএসপি আবু মুছা জানান, তারা সন্ত্রাসী তৎপরতার খবর পাওয়ামাত্র অভিযান চালাচ্ছেন। পুলিশ সুপার রঞ্জিত কুমার জানান, সন্ত্রাসীদের অবস্থান শনাক্ত করে সেনা-পুলিশ-বিজিবি যৌথ অভিযান চালাবে।

সর্বশেষ খবর