শনিবার, ১ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

ইটভাটা গিলছে তিন ফসলি জমি

উৎপাদন কমছে খাদ্য উদ্বৃত্ত জেলা কুষ্টিয়ায়

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

কুষ্টিয়ায় প্রতি বছর কৃষি জমি দখল করে গড়ে উঠছে নতুন নতুন ইটভাটা। ভাটার আগ্রাসনে হারিয়ে যাচ্ছে তিন ফসলি জমি। ফলে দিন দিন উৎপাদন কমছে খাদ্য উদ্বৃত্ত এই জেলায়।

জানা যায়, কুষ্টিয়া জেলার মোট এক লাখ ৬২ হাজার হেক্টর জমির মধ্যে এক লাখ ১৭ হাজার হেক্টর কৃষি জমি হিসেবে চিহ্নিত। এরমধ্যে অতি ঊর্বর তিন বা অধিক ফসলি জমির পরিমাণ ৭৬ হাজার হেক্টর। কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, প্রতি বছর এ কৃষি জমিতে উৎপাদিত খাদ্যশষ্য জেলার বার্ষিক চাহিদা পূরণ করেও উদ্বৃত্ত খাদ্যশস্য অন্যান্য জেলায় সরবরাহ করা হচ্ছে।

সূত্র জানায়, কুষ্টিয়ার ছয় উপজেলায় বর্তমানে ১৫২টি ইটভাটা রয়েছে। প্রতি বছরই বাড়ছে ভাটার সংখ্যা। আর এসব ইটভাটার বেশির ভাগই স্থাপন করা হচ্ছে ফসলি জমি বা এর পাশ ঘেঁষে।

কুষ্টিয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক বিভূতি ভূষণ জানান, কৃষি বিনষ্টের অন্যতম প্রধান কারণ ইটভাটা। বিগত এক দশকে কুষ্টিয়ার অতি ঊর্বর তিন ফসলি ৭৫ হাজার ৮৮০ হেক্টর কৃষি জমির মধ্যে ২৮৮ হেক্টরে গড়ে উঠা দেড় শতাধিক ভাটা প্রত্যক্ষভাবে ধ্বংস করেছে কৃষি জমি। এছাড়া ভাটার দূষণ ও বিরূপ প্রভাবে আশপাশের জমির ফসলহানি হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘কৃষি বিভাগ থেকে কোনো প্রকার ছাড়পত্র ছাড়াই কৃষি জমিতে ইটভাটা গড়ে উঠছে। আমাদের হাতে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা না থাকায় কিছুই করার নেই।’ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জোবায়ের হোসেন জানান, ভূমি জোনিং অ্যাক্ট-২০১০, কৃষি জমি সুরক্ষা আইন-২০১৫, পরিবেশ সুরক্ষা আইন-১৯৯৫, ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন নীতিমালা-২০১৩ সবই লংঘিত হয়েছে এ উপজেলার ইটভাটা স্থাপনের ক্ষেত্রে। ইটভাটা মালিক সমিতির বশির উদ্দিন, আব্দুল হাকিম, মহিদুল, মনিরুল, খোকন জানান, ‘আমরা ভ্যাট-ট্যাক্সসহ সংশ্লিষ্ট সব দফতরে নিয়মিত টাকা দিচ্ছি। আমরা যদি অবৈধ হই তাহলে আমাদের কাছ থেকে টাকা কেন নেওয়া হচ্ছে।’ কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ওবাইদুর রহমান জানান, কেউ ইচ্ছা করলেই জমির শ্রেণি পরিবর্তন করতে পারবেন না। আইনের ব্যত্যয় ঘটেছে এমন অভিযোগ পেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর