মঙ্গলবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

পাহাড় কেটে ইটভাটা জ্বালানি বনের কাঠ

কবির হোসেন সিদ্দিকী, বান্দরবান

বান্দরবানের লামা ও আলীকদম উপজেলায় পাহাড় কেটে একের পর এক গড়ে উঠছে ইটভাটা। এ ক্ষেত্রে অগ্রাহ্য করা হচ্ছে ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন-২০১৩। ইট তৈরির মাটিও নেওয়া হচ্ছে পার্শ্ববর্তী পাহাড় কেটে। আর জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে বনের কাঠ।

জানা যায়, লামার ফাইতং এলাকায় অর্ধশত ও আলীকদমের পাঁচটি ইটভাটার কোনোটিরই বৈধতা নেই। উপজেলা পরিবেশ ও বন কমিটির সভায় ভাটাগুলোতে পাহাড় কাটা ও কাঠ পোড়ানোর বিরুদ্ধে প্রস্তাব পাস হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। সরেজমিন দেখা যায়, ফাইতয়েংয়ের দুই কিলোমিটার এলাকায় ৪৫টি এবং আলীকদমের পূর্ব পালং পাড়া ও আমতলীতে দুটি ভাটায় স্থাপন করা হয়েছে ড্রামশিট চিমনি। এ সব ভাটায় লাকড়ি পরিবহনের কারণে গ্রামীণ সড়কগুলো সারা বছরই খানাখন্দে ভরা থাকে। ভারী যান চলাচলের ফলে কখনও কখনও ধসে পড়ে রাস্তা, ব্রিজ ও কালভার্ট। রাস্তাঘাট ধুলায় একাকার হয়ে সাধারণের চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়। অবৈধভাবে সংগ্রহ করা কাঠ ইটভাটায় যোগান দিতে গত কয়েক বছর ধরে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে কথিত ক্ষুদ্র কাঠ ব্যবসায়ী সমিতি। এ সমিতির মাধ্যমে লাকড়ির পরিমাণের ওপর নির্দিষ্ট হারে চাঁদা তোলা হয়। সে চাঁদার ভাগ যায় বিভিন্ন ঘাটে। আলীকদম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজিমুল হায়দার বলেন, ‘আলীকদমে কোনো ইট ভাটার লাইসেন্স নেই। শীঘ্রই অবৈধ এসব ভাটার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে।’ বান্দরবান জেলা প্রশাসক দাউদুল ইসলাম বলেন— ‘লামা-আলীকদমের বৈধতা ভাটাগুলো বন্ধে চিঠি দেওয়া হয়েছে।’ উল্লেখ্য, ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন-২০১৩ এর ৬ নম্বর ধারায় আছে, ‘কোনো ব্যক্তি ভাটায় ইট পোড়ানোর কাজে জ্বালানি হিসেবে কাঠ ব্যবহার করতে পারবেন না’। এ আইনের-৪ এ আছে ‘জেলা প্রশাসকের নিকট হতে লাইসেন্স গ্রহণ ব্যতিরেকে কোনো ব্যক্তি ইট প্রস্তুত করতে পারবেন না’। ৫ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, ‘কৃষিজমি বা পাহাড় বা টিলা হতে মাটি কেটে বা সংগ্রহ করে ইটের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না’। এছাড়া ‘স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর কর্তৃক নির্মিত উপজেলা বা ইউনিয়ন বা গ্রামীণ সড়ক ব্যবহার করে কোনো ব্যক্তি ভারি যানবাহন দিয়ে ইট বা ইটের কাঁচামাল পরিবহন করতে পারবেন না’।

সর্বশেষ খবর