মঙ্গলবার, ১ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

চাঁপাইয়ের দুটি আসনে আওয়ামী লীগের পরাজয়ের নেপথ্যে

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ (শিবগঞ্জ) আসনে মহাজোট প্রার্থী ডা. সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল এক লাখ ৮০ হাজার ৭৮ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থী শাহজাহান মিয়া পেয়েছেন এক লাখ ৬৩ হাজার ৬৫০ ভোট। এ আসনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে মহাজোটের প্রার্থী বিজয়ী হলেও চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ এ পরাজিত হয়েছে আওয়ামী লীগের প্রার্থী। চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ (নাচোল-ভোলাহাট-গোমস্তাপুর) এক লাখ ৭৫ হাজার ৪৬৬ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থী আমিনুল ইসলাম। তার নিকটতম মহাজোট প্রার্থী মুহা. জিয়াউর রহমানের প্রাপ্ত ভোট এক লাখ ৩৯ হাজার ৯৫২। আর চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ (সদর) আসনে ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থী হারুনুর রশিদ এক লাখ ৩৩ হাজার ৬৬১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম মহাজোট প্রার্থী আব্দুল ওদুদ পেয়েছেন ৮৫ হাজার ৯৩৮ ভোট। এ দুটি আসনে আওয়ামী লীগের পরাজয়ের কারণ বিশ্লেষণ করেছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, জেলায় ব্যাপক উন্নয়ন হওয়া সত্ত্বেও আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের পরাজয়ের প্রধান কারণ নেতৃত্বের কোন্দল ও বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগদানকারীদের দলে প্রাধান্য দেওয়া।

সূত্রমতে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে বর্তমান এমপি মুহা. গোলাম মোস্তফাকে মনোনয়ন না দেওয়ায় তিনি দলের প্রার্থী মুহা. জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে কাজ করেছেন এবং তার অনুসারীদের আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে ভোট না দেওয়ার জন্য উৎসাহিত করেছেন। তবে শেষদিকে তিনি দলের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার জন্য কয়েকটি সমাবেশ করলেও সেগুলো লোক দেখানো ছিল বলে মন্তব্য করছেন অনেকেই। এছাড়া গোলাম মোস্তফা বিশ্বাস গত ৫ বছরে দলের মধ্যে পরিবারতন্ত্র কায়েম করায় সাধারণ নেতা-কর্মী-সমর্থকরা ছিলে কোণঠাসা। ফলে তারাও ভোট বাড়াতে তেমন তৎপরতা দেখাননি। সাধারণ মানুষও আওয়ামী লীগের তেমন সহায়তা না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ ছিল তারা। অন্যদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের প্রার্থী জামায়াত-বিএনপি থেকে আসা নেতা-কর্মীদের অধিক গুরুত্ব দেওয়ায় তারা আওয়ামী লীগের ভেতর থেকে বিএনপির পক্ষে কাজ করেছেন বলে মনে করছেন অনেকে। তাদের মতে, অতি সম্প্রতি মাদক সম্্রাট খ্যাত শাহীদ রানা টিপু ওরফে টিপু সুলতানকে গ্রেফতার করানোর জন্য বর্তমান এমপি আব্দুল ওদুদের লোকজন সভা-সমাবেশ এমনকি মানববন্ধনও করেছে। সংসদ সদস্য তাকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছিলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে টিপু সুলতান দীর্ঘদিন ধরে আতামগোপনে থেকে বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক হারুনুর রশিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তার পরামর্শ অনুযায়ী চলেছেন। ভোটের মাত্র কয়েকদিন আগে তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী আব্দুল ওদুদের ওপর ভর করে একটি সমাবেশে প্রকাশ্যে আসেন এবং বক্তৃতা করেন। স্থানীয়দের অভিযোগ তিনি আওয়ামী লীগের জনসভায় বক্তব্য রাখলেও ভেতর ভেতর বিএনপির পক্ষে কাজ করেছেন। এই কারণে আওয়ামী লীগ প্রার্থী চরাঞ্চলে ভোট কম পেয়েছেন।

 

 

সর্বশেষ খবর