রবিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

বাঞ্ছারামপুর ও চৌদ্দগ্রামে থামছে না মাতম

চকবাজারে অগ্নিকান্ড

ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কুমিল্লা প্রতিনিধি

রাজধানীর চকবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে নিহতদের মধ্যে একজন ডা. আশরাফুল হক রাজন। তার গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ফরদাবাদ গ্রামে। তার মৃত্যুর খবর শোনার পর এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া। আত্মীয়-স্বজন ও গ্রামবাসীর আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠে বাতাস। রাজনের বাবা জামশেদ মিয়া বিলাপ করে জানান, ‘ছেলে খুবই মেধাবী ও ধার্মিক ছিল। ইচ্ছা ছিল ছেলে ডাক্তার হয়ে গ্রামের মানুষকে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা দেবে। আগুন আমার ছেলেকে কেড়ে নিল’। গ্রামের বাড়ি ফরদাবাদে শুক্রবার সকালে জানাযা শেষে রাজনকে পরিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। দুপুরে স্থানীয় সংসদ সদস্য ক্যাপ্টেন (অব.) এ বি তাজুল ইসলাম সমবেদনা জানাতে নিহতের বাড়িতে যান। এ সময় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল ইসলামসহ দলীয় নেতা-কর্মীরা তার সঙ্গে ছিলেন।

জানা যায়, চকবাজারের মদিনা ডেন্টাল ক্লিনিকে প্রাকটিকেল কাজ শিখতে গিয়েছিলেন ডা. আশরাফুল হক রাজন। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস-লাশ হয়ে ফিরলেন তিনি। দুর্ঘটনার দিন বিকালে রাজন বাসা থেকে বের হওয়ার সময় মাকে বলে গিয়েছেন ফিরতে দেরি হবে। মা গভীর রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করেন। উৎকন্ঠায় ছিল পুরো পরিবার। পরদিন সকালে তার ক্যাম্পাস বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজে গিয়ে জানতে পারেন বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে পুরান ঢাকায় গিয়েছেন আশরাফুল। ভাইয়েরা প্রথমে চকবাজার পরে ছুটে যান ঢাকা মেডিকেলে। হাসপাতালে আহতদের তালিকায় ভাইকে না দেখে মর্গে গিয়ে লাশ শনাক্ত করেন ছোট ভাই ফখরুল হক সুজন। একই ঘটনায় মারা যান কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের খবির উদ্দিন নাহিদ (৩৮)। তিনি চৌদ্দগ্রাম উপজেলার আতাকরা গ্রামের দক্ষিণ পাড়ার সৈয়দ কামাল উদ্দিন ছেলে। তার বাড়িতে তিনদিনেও থামেনি শোকের মাতম। নাহিদের ভাতিজা আব্দুল হাই মিল্লাত জানান, তার কাকা ঢাকায় দীর্ঘদিন প্লাস্টিক ও চালের ব্যবসা করতেন। তিনি স্ত্রী আকলিমা ও দুই কন্যা নিয়ে ঢাকায় বসবাস করতেন। বড় মেয়ে আয়েশা নাহিদ (৭) প্রথম শ্রেণির ছাত্রী। ছোট মেয়ে আদিবা নাহিদ নাতাশার বয়স পাঁচ বছর। জানা যায় দুর্ঘটনার রাতে নাহিদ মালামাল ডেলিভারি দিতে গুদামে প্রবেশ করেছিলেন। সেখানেই পুওড় মারা যান তিনি। তার মরদেহ বাড়িতে আনার পর স্বজনদের আহাজারিতে শোকাবহ পরিবেশের তৈরি হয়।

সর্বশেষ খবর