মঙ্গলবার, ২ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা

দুই ইউনিয়ন পুরুষশূন্য, লেখাপড়া বন্ধের উপক্রম ৩০ কিশোরীর

খুনের জেরে বাড়ি-ঘরে লুটপাট আগুন

মাদারীপুর প্রতিনিধি

একটি খুনের ঘটনার জেরে একের পর এক হামলা, ভাঙচুর, আগুনের ঘটনায় আতঙ্কে পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে মাদারীপুর সদর উপজেলার পাঁচখোলা ও কালিকাপুর ইউনিয়ন। পুরুষ সদস্যরা বাড়িতে না থাকায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে নারী-শিশুরা। হয়রানির ভয়ে স্কুলে যেত না পারায় পড়ালেখা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে এ দুই ইউনিয়নের কমপক্ষে ৩০ কিশোরীর। গ্রামে ঘটছে চুরির ঘটনাও। সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, এলাকার শফিক, এজাজ, সেলিম, জহির আকন, তেলাম, লতিফ ফরাজী, টিটন, জলিল বেপরীরসহ ২৫টি বসতঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এছাড়া সরোয়ার, ইয়াকুব, সেলিম, ওবায়দুল, দেলোয়ার, আউয়াল, নজরুল, জসিম, শহিদুল, হেমায়েত, বাবুল, খালেক আকনের বাড়িসহ অর্ধশতাধিক বাড়ি-ঘরে হামলা ভাঙচুর ও লুটপাট চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। নিয়ে গেছে টিভি, ফ্রিজ, স্বর্ণালঙ্কার, মোবাইল ফোনসহ নগদ টাকা। কালিকাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাজার এবং পাঁচখোলা ইউনিয়নের ছিল আনন্দবাজার। হত্যার ঘটনার পর বাজার দুটি প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। দোকানপাটের অস্তিত্ব নেই বললেই চলে। রিজিয়া বেগম নামে এক নারী বলেন, ‘ওরা আমার ঘর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। পরনের কাপড় ছাড়া এখন আমার কিছুই নেই। যারা অপরাধ করছে তাদের বিচার হোক। আমাদের বাড়ি-ঘর কেন পোড়াবে?’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক স্কুলছাত্রী বলেন, ‘আমরা স্কুলে গেলে আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে। রাতে ভয়ে থাকি। ওরা এসে আমাদের ঘরের বাইরে নিয়ে লাঞ্ছিত করে। অনেকে স্কুলে যাওয়াও বন্ধ করে দিয়েছে। কেউ কেউ চলে গেছে আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে। আমরা এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ চাই। মাদারীপুর সদর থানার এসআই শ্যামল জানান, চেষ্টা করছি দুই পক্ষকেই শান্ত রাখার।

এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ভাঙচুর ও লুটপাট এবং অগ্নিকান্ডের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তরা চাইলে মামলা করতে পারে। সে ক্ষেত্রে তাদের আইনগত সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে।’ জানা যায়, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সাহেবালী মাতুব্বর নামে এক ব্যক্তি গত ২৭ ফেব্রুয়ারি খুন হন। ঘটনার পর কালিকাপুর ইউপি চেয়ারম্যান এজাজ আকনসহ ৫৭ জনের নামে সদর থানায় মামলা হয়।

সর্বশেষ খবর