শনিবার, ৪ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা

চোরাচালানির দখলে কমিউটার ট্রেন!

রুট বেনাপোল-যশোর খুলনা, দিনে কোটি টাকার পণ্য পাচার

বেনাপোল প্রতিনিধি

চোরাচালানির দখলে কমিউটার ট্রেন!

চোরাচালানিদের ‘নিরাপদ রুটে’ পরিণত হয়েছে বেনাপোল-যশোর-খুলনা চলাচলকারী কমিউটার ট্রেন। এ ট্রেনে চোরাচালান অবাধ করতে এই রুটে সক্রিয় রয়েছে একটি সিন্ডিকেট। তাদের তৎপরতায় প্রতিদিন পাচার হচ্ছে মাদক, অস্ত্র, সোনা, কাপড়, কিশমিশ, চিনিসহ কোটি টাকার বিভিন্ন পণ্য। সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যে যাত্রীদের পোহাতে হচ্ছে দুর্ভোগ।

জানা যায়, প্রতিদিন এই রেল রুটে অন্তত ৬০০ যাত্রী যাতায়াত করেন। ভোর ৬টায় কমিউটার ট্রেন খুলনা থেকে বেনাপোলের উদ্দেশে ছেড়ে আসে। বেনাপোল থেকে যশোর হয়ে খুলনার উদ্দেশে ছেড়ে যায় সকাল ৯টায়। অপর ট্রেনটি খুলনা থেকে ১২টায় ছেড়ে বেনাপোলে পৌঁছায় দুপুর আড়াইটায়। এ ট্রেনটি বিকাল সাড়ে ৩টায় বেনাপোল থেকে ছেড়ে যশোর ও খুলনার উদ্দেশে রওয়ানা হয়। নাভারণ, ঝিকরগাছা, যশোর ও নওয়াপাড়া থেকে চোরাকারবারিরা ট্রেনে উঠে বেনাপোল পৌঁছায়। ফিরতি ট্রেনে তারা বিভিন্ন পণ্য ও প্রশাধন সামগ্রী নিয়ে যায়। ট্রেনের বগির অধিকাংশ জায়গাজুড়ে রাখা হয় এ সব অবৈধ পণ্য। ফলে ভোগান্তির শিকার হন যাত্রীরা। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পণ্যের বাহক হিসেবে নারীদের ব্যবহার করা হয়। তারা টাকার বিনিময়ে এ সব পণ্য আনা-নেওয়া করেন। কেউ কেউ নিজেই চোরাচালান সিন্ডিকেটের সদস্য হিসেবে কাজ করছেন। চোরাচালানি পণ্যগুলো যশোর, নওয়াপাড়া, বসুন্দিয়া ও খুলনায় নামিয়ে নেওয়া হয়। যাত্রীরা জানান, মাঝেমধ্যে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে ম্যাজিস্ট্রেট অভিযান চালিয়ে বিপুল মালামাল আটক করে থাকেন। তাতেও থামছে না চোরাচালান। যশোর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার শহিদুজ্জামান বলেন, ‘আমরা যাত্রীদের ভালো সেবা দিতে কাজ করছি। চোরাচালান প্রতিরোধের জন্য রেল পুলিশ রয়েছে। এটা তাদের কাজ।’ এক কাস্টমস কর্মকর্তা জানান, গত মাসে (মার্চ) বোনাপোল-যশোর রুটে যাত্রীবাহী ট্রেন থেকে ৯ মণ আতশবাজি জব্দ করা হয়েছে। বেনাপোল পোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি আলমগীর হোসেন জানান, চোরাচালান প্রতিরোধে কমিউটার ট্রেনে অভিযান চালানো হচ্ছে। প্রায়ই বড় বড় চালান ধরা হচ্ছে এমন রেকর্ডও থানায় রয়েছে। রেল পুলিশকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি।

 

 

সর্বশেষ খবর