মঙ্গলবার, ৪ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

লালমনিরহাটে ভাইরাস জ্বরের প্রাদুর্ভাব

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

লালমনিরহাটে ভাইরাস জ্বরের প্রাদুর্ভাব

আবহাওয়ার পরিবর্তনজনিত কারণে লালমনিরহাটে বেড়েছে ভাইরাস জ্বরের প্রাদুর্ভাব। ঘরে ঘরে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। তবে এর মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধের সংখ্যাই বেশি।

জানা গেছে, ১৫ দিন ভ্যাপসা গরম শেষে গত সপ্তাহ থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি, দমকা বাতাসে ঠা-া অনুভূত হওয়ায় অনেকেই জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন। এতে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন শিশু ও বৃদ্ধরা। এ বৈরী আবহাওয়া প্রাণীদেহে অসহনীয় হয়ে পড়ায় নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। ভাইরাস জ্বরে আক্রান্ত হলে ওষুধ সেবন করেও তিন দিনের আগে আরোগ্য লাভ হচ্ছে না। আক্রান্তদের ন্যূনতম ৩-৫ দিন ভুগতে হচ্ছে। কোনো কোনো পরিবারে সব সদস্য একসঙ্গে জ্বরে আক্রান্ত হওয়ায় সেবা করার লোকও পাচ্ছেন না তারা। আদিতমারী উপজেলার নামুড়ি গ্রামের কলেজছাত্রী  সুমি বেগম জানান, তাদের পরিবারে ৫ সদস্যের সবাই একসঙ্গে জ্বর ও পাতলা পায়খানায় ভুগছেন দুই দিন ধরে। ওষুধ সেবন করেও কোনো সুফল পাচ্ছেন না। চিকিৎসকরা জানান, ভাইরাস জ্বর ন্যূনতম ৪/৫ দিন লাগবে সেরে উঠতে। কালীগঞ্জ উপজেলার তুষভা ার এলাকার রাহেবুল ইসলাম টিটুল জানান, তিন দিন আগে রাতে নামাজ শেষে বাড়ি ফিরে শরীরে ব্যথা অনুভব করেন। পরদিন শুরু হয় সর্দি জ্বর। প্যারাসিটামলে কাজ না হওয়ায় পল্লী চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলে দেখতে পান ১০৬.২ ডিগ্রি জ্বরে উঠেছে তার। এর তিন দিন পর কিছুটা সুস্থতা অনুভব করলে বাড়ির আরও দুজন সদস্য জ্বরে আক্রান্ত হন। ওষুধ সেবনেও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানান তিনি। ঘরে ঘরে এ ভাইরাস জ্বরে আক্রান্ত প্রায় সবাই স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক সেবনও বেড়েছে। যারা ৭-১০ দিন জ্বরে আক্রান্ত তারা ছুটছেন জেলার হাসপাতাল বা ক্লিনিকে। তবে রেজিস্টার্ড চিকিৎসকদের মতে এটি আবহাওয়া পরিবর্তনজনিত ভাইরাস জ্বর। আতঙ্কিত না হয়ে আক্রান্তদের আলাদা বিছানায় রেখে সেবা করতে হবে। এ ভাইরাসটি তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া এবং হঠাৎ তা নেমে যাওয়ার কারণেও হয়ে থাকে। যা হাঁচি, কাশি বা লালার মাধ্যমে অন্য দেহে ছড়িয়ে পড়ে। তাই মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ চিকিৎসকদের। ওষুধ সেবন না করেও ৩/৪ দিন পর শরীরের তাপমাত্রা কমে গিয়ে স্বাভাবিক হবে। আক্রান্তের ৩/৪ দিন আগে অ্যান্টিবায়োটিক সেবন না করাই উত্তম বলে মন্তব্য করেন তারা। লালমনিরহাট সিভিল সার্জন ডা. কাসেম আলী  জানান, তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় এবং হঠাৎ বৃষ্টির কারণে জেলায় ভাইরাস জ্বরের রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। এটি ছোঁয়াছে রোগ। রোগীকে সেবাদানকারী ব্যক্তিকে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। অন্যথায় ছড়িয়ে পড়বে। তিনি নিজেও মাস্ক ব্যবহার করে রোগী দেখছেন। আক্রান্তের ৩/৪ দিন অ্যান্টিবায়োটিক সেবন না করে পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। তবে আক্রান্তের ৫ দিন অতিবাহিত হলে নিকটস্থ কমিউনিটি ক্লিনিক বা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

 

সর্বশেষ খবর