মঙ্গলবার, ২ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

যমুনায় বিলীন হচ্ছে বসতভিটা ফসলি জমি, হুমকিতে বাঁধ

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

যমুনায় বিলীন হচ্ছে বসতভিটা ফসলি জমি, হুমকিতে বাঁধ

যমুনার ভাঙনে নিস্ব হচ্ছে মানুষ। সিরাজগঞ্জের কাওয়াকোলা এলাকা থেকে তোলা ছবি

অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে ভাঙনের হুমকিতে পড়েছে সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষাবাঁধ। অন্যদিকে নদীর পূর্বপাড়ে কাওয়াকোলা ইউনিয়নের চরাঞ্চলের নদীতীর ঘেঁষে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করায় শুরু হয়েছে ব্যাপক ভাঙন। মাত্র ২০ দিনের ব্যবধানে চরাঞ্চলের হাটবয়ড়া ও কাওয়াকোলা গ্রামের দেড় শতাধিক বসতভিটা এবং ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনকবলিতরা খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আনিসুর রহমান জানান, শহর রক্ষাবাঁধ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। বালু ব্যবসায়ীরা সরকার ঘোষিত বালু মহালের বাইরে গিয়ে বালু উত্তোলন করায় শহর-চরাঞ্চল হুমকির মুখে পড়ছে। ইতিমধ্যে কয়েকবার ড্রেজার মেশিন জব্দসহ জরিমানাও করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহমেদ জানান, অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসন শুধু আশ্বাসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম জানান, হার্ডপয়েন্ট ও পার্শ্ববর্তী এলাকা ড্রেজিং করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। একটি মহল এ এলাকায় অবৈধ বালু উত্তোলন করছে। গত শুক্রবার একটি ড্রেজার মেশিন আটক করা হলেও সেটি ছিনিয়ে নিয়ে যায় এবং এক কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করে। এ নিয়ে ৭-৮ জনের নামে মামলা করা হয়েছে। তারপরও বালু উত্তোলন থামছে না। কাওয়াকোলা গ্রামের একাধিক কৃষক জানান, নদীতীর থেকে মাত্র ৫০ গজ দূর থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। ফলে ভাঙন দেখা দিয়েছে। চরাঞ্চলের মানুষের জীবিকার একমাত্র অবলম্বন ফসলি জমি ভেঙে যাওয়ায় অনেকে নিঃস্ব হয়ে পড়ছে। দ্রুত ড্রেজার অপসারণ করা না হলে কয়েকটি গ্রাম বিলীন যাবে। ঘর-বাড়ি বিলীন হয়ে যাওয়া পরিবারের লোকজন অন্যের জায়গায় ঝুপড়ি ঘর তুলে বসবাস করছে। কাজকর্ম না থাকায় কারও বাড়িতে চুলা পর্যন্ত জ্বলছে না। কাওয়াকোলা ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল আলীম জানান, সরকার ঘোষিত স্থান থেকে বালু উত্তোলন করলে কোনো সমস্যা হবে না। কিন্তু নদী তীরঘেঁষে বালু উত্তোলন করায় ইউনিয়ন ভাঙনের মুখে পড়েছে। অন্যদিকে, শহর রক্ষাবাঁধ রক্ষায় সচেতন মহল অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে হার্ডপয়েন্টে মানববন্ধন করেছে। এ সময় বক্তারা জানান, বালু ব্যবসায়ীরা সরকারিভাবে লিজ নিয়েছে দোরতা, চা াল বয়ড়া ও জিয়ারপাড়া। কিন্তু তারা অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে হার্ডপয়েন্টের কাছ থেকে। এভাবে বালু উত্তোলন করলে শহর রক্ষাবাঁধ বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সর্বশেষ খবর