বৃহস্পতিবার, ৪ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

পুনর্বাসন প্রকল্পে বদলেছে জীবন

ওরা আর কারও কাছে হাত পাতে না, ঘরে জ্বলে আলো

আবদুর রহমান টুলু, বগুড়া

পুনর্বাসন প্রকল্পে বদলেছে জীবন

পুনর্বাসন প্রকল্পের অধীনে দোকান পাওয়া সাবেক এক ভিক্ষুক

বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার সরকারি কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় আয়ের পথ খুঁজে পেয়েছেন শতাধিক ভিক্ষুক। ভিক্ষাবৃত্তি ছেড়ে ক্ষুদ্র ব্যবসা করে এখন পরিবারে তিনবেলা খাবারের জোগান দিচ্ছেন তারা। তাদের ঘরে আলো জ¦লছে। অন্যের কাছে আর হাত পাতেন না। আনন্দেই দিন কাটছে এক সময়ের অসহায় এ মানুষগুলোর। সোনাতলার ইউএনও কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, শেখ হাসিনা সরকার দেশকে ভিক্ষুকমুক্ত করতে ভিক্ষুক পুনর্বাসন প্রকল্প হাতে নেয়। সেই প্রকল্পের আওতায় বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার শতাধিক ভিক্ষুক এখন ভিক্ষাবৃত্তি ছেড়ে দিয়েছেন। নিজের উপার্জিত অর্থে পরিবার পরিজন নিয়ে তিনবেলা খেয়ে-পড়ে জীবনজীবিকা নির্বাহ করছেন তারা। সাবেক এ সব ভিক্ষুকের মধ্যে ১৫ জনকে দোকান ও ভ্যানগাড়ি কিনে দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। এছাড়া ৯২ জনকে একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের আওতায় এনে সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়েছে। সোনাতলার জোড়গাছা ইউনিয়নের সোনাকানিয়া গ্রামের আব্দুল বাছেদ প্রামাণিকের ছেলে শারীরিক প্রতিবন্ধী আবুল কাশেম (৬২) জানান, তার বসতবাড়ির মাত্র তিন শতক জমি ছাড়া আর কোনো ফসলি জায়গা জমি নেই। নিজ বাড়িতে কোনোমতে মাথাগুজে ভিক্ষাবৃত্তি করে সংসার চালাতেন। সম্প্রতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও জেলা প্রশাসকের সহযোগিতার পাশাপাশি স্থানীয় কয়েকজনের আর্থিক সহায়তায় একটি দোকানঘর পেয়েছেন। এই মুদি দোকানের আয় দিয়ে তার সংসার চলছে। আর ভিক্ষাবৃত্তি করতে হয়না। তার ঘরে আগে ঠিকমতো আলোর ব্যবস্থা ছিল না এখন আলো জ্বলছে।

সোনাতলা সদর ইউনিয়নের সুজাইতপুর গ্রামের টুকু বেপারী, ছলেমন, চরপাড়ার নান্টু, দিগদাইড় ইউনিয়নের কলসদহ পাড়ার নূরজাহান, পশ্চিম তেকানী এলাকার অন্ন রানী, মিলনের পাড়ার শিমুলী বেগম ও আচারের পাড়ার সুফিয়া জানান, উপজেলা প্রশাসন থেকে তাদের ভ্যান গাড়ি ও দোকান করে দেওয়া  হয়েছে। এতে করে তারা ভিক্ষাবৃত্তি ছেড়ে দিয়েছেন। ক্ষুদ্র ব্যবসা করে তাদের সংসার চলছে। পরিবার পরিজন নিয়ে তারা সম্মানের সঙ্গে তিনবেলা খেতে পারছেন। সোনাতলার ইউএনও শফিকুর আলম জানান, ভিক্ষাবৃত্তিতে নিয়োজিত জনগোষ্ঠীকে পুর্নবাসনের জন্য ২০১৮ সালে একটি তালিকা করা হয়। এরপর উপজেলার ৯২ জন ভিক্ষুককে একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের আওতায় সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ১৫ জনকে দেওয়া হয়ে দোকান ও ভ্যান গাড়ি। ওরা এখন নিজের পায়ে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছে।

সর্বশেষ খবর