লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় দুই দিন ধরে সন্তানকে নিয়ে স্বামীর বাড়ির সামনে অনশন করছেন রেবিনা বেগম (২৪) নামে এক নারী। তার দাবি, তার অধিকার অনুযায়ী স্বামীকে ফিরিয়ে দিতে হবে, নয়তো তিনি আত্মহত্যা করবেন।
গত শুক্রবার রাতে স্বামীর বাড়ির সামনের রাস্তায় সন্তানকে শুইয়ে রেখে সারা রাত বসে কাটিয়েছেন রেবিনা। এর আগে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে স্বামীর বাড়িতে এলে শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে মারধর করে তাড়িয়ে দেয়। এরপর থেকে সন্তানকে নিয়ে অনশন শুরু করেন রেবিনা বেগম।
স্থানীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে, ২০০৬ সালে উপজেলার ফকিরপাড়া গ্রামের মৃত তরিফ উদ্দিনের ছেলে এমদাদুল ইসলামের (২৮) সঙ্গে একই উপজেলার বড়খাতা ইউনিয়নের পূর্ব সারডুবী গ্রামের ইউনুস আলীর মেয়ে রেবিনা বেগমের ৮০ হাজার টাকা যৌতুক দিয়ে বিয়ে হয়। এরপর ভালোই চলছিল তাদের সংসার। দুই সন্তানের মাও হন রেবিনা। এরই মধ্যে এমদাদুল ইসলাম ব্যবসার কথা বলে স্ত্রীকে যৌতুকের টাকার জন্য চাপ দেন। রেবিনা বেগমের বাবা গরিব হওয়ায় টাকা দিতে না পারায় নির্যাতন শুরু করেন এমদাদুল। স্থানীয়ভাবে কয়েকবার বিচার-শালিস হলেও তা কোনো কাজে আসেনি। রেবিনা স্বামীর নির্যাতন সইতে না পেরে বাবার বাড়ি আসেন এবং আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলা চলা অবস্থায় এমদাদুল নীলফামারী জেলার চাপানী এলাকার নাজলী নামে এক নারীকে বিয়ে করে ঘরে নিয়ে আসেন। এ খবর শুনে রেবিনা বেগম সন্তান রাহুলকে (৭) নিয়ে স্বামীর বাড়ি সামনে অনশন শুরু করেছেন। এমদাদুল উপজেলার বড়খাতা বাজারের হাজী মসজিদের সঙ্গে একটি দোকান ভাড়া নিয়ে বিভিন্ন যন্ত্রপাতির ব্যবসা করেন।রেবিনা বেগম বলেন, ‘আমার স্বামীর বাড়িতে এলে শ্বশুরবাড়ির লোকজন মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেন। আমি আমার সন্তান ও স্বামীর অধিকার নিয়ে এসেছি। আমার স্বামীকে ডিভোর্স করিনি, তাই আমার অধিকার আছে। আমার স্বামীকে ফিরে পেতে চাই। স্বামী-স্ত্রীর মাঝে ঝগড়া হতেই পারে। তাই বলে আমার অনুমতি না নিয়ে অন্য জায়গায় বিয়ে করতে পারেন না। তাই আমি সন্তানকে নিয়ে সারা রাত রাস্তায় বসে থাকব। সমাধান না পেলে সন্তানকে নিয়ে আত্মহত্যা করব।’
অন্যদিকে এমদাদুলের মা আলেকজন নেছা দাবি করেন, ‘আমরা কেউ তাকে মারধর করিনি। ওই বউ মামলা করেছে তাই তাকে ঘরে উঠাব না। ওই বউ নিয়ে অনেক ঝামেলা হয়েছে তাই ছেলেকে অন্য জায়গায় বিয়ে দিয়েছি।’
এ বিষয়ে হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর ফারুক বলেন, মেয়ে পক্ষের কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।