বুধবার, ১০ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে সামাজিক অপরাধ

জুনে নেত্রকোনায় ৪২ নারী নির্যাতন

নেত্রকোনা প্রতিনিধি

নেত্রকোনায় আশঙ্কাজনক হাবে বাড়ছে সামাজিক অপরাধ। পুলিশ প্রতিবেদন এবং হাসপাতালের তথ্য অনুযায়ী দিন দিন বেড়ে চলছে নির্যাতন, ধর্ষণ ও অপমৃত্যু। বিশ্লেষকরা মনে করছেন আইনের যথাযথ ব্যবহার না হওয়ায়, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ, ডিজিটাল প্রযুক্তির অপব্যবহার এ সবের অন্যতম কারণ। জেলা পুলিশের গত এক মাসের রিপোর্টে উঠে এসেছে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের ভয়াবহ চিত্র। বিভিন্ন সংগঠন প্রতিটি ঘটনার পরই প্রতিবাদ জানালেও কোনো কাজে আসছে না। জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত জুন মাসে নেত্রকোনায় ১৩টি ধর্ষণসহ ৪২টি নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। শিশু নির্যাতন ও অপহরণের ঘটনা ঘটেছে ছয়টি। এ সময়ে মাদকদ্রব্য, অস্ত্র আইন, খুন, চোরাচালানসহ ১০ থানায় মামলা হয়েছে ২৯৪টি। প্রতিটি অপরাধের সংখ্যা গত মে মাসের তুলনায় অনেক বেশি। হাসপাতলের হিসাব মতে জুন মাসে আটটি অপমৃত্যুসহ ময়নাতদন্ত হয়েছে ২০টি। ধর্ষণসহ পরীক্ষার জন্য ভিকটিম এসেছে ২৮ জন। নেত্রকোনার সিভিল সার্জন তাজুল ইসলাম ২০১৮ সালের জুনের সঙ্গে চলতি বছরের জুন মাসের তুলনা করে ময়নাতদন্ত এবং ভিকটিম পরীক্ষার জরিপ দেখিয়ে বলেন, ‘এ বছর সামাজিক অস্থিরতায় অপরাধ বেড়েছে।’ উন্নয়ন গবেষক ও লেখক স্বপন পাল বলেন, ‘মানুষের মধ্যে যখনই বিচ্ছিন্নতা সৃষ্টি হয়েছে তখনই তৈরি হয়েছে অস্থিরতা। এ অস্থিরতায় ব্যবহৃত তরুণ সমাজ নানা প্রলোভনের শিকার হয়ে অপরাধে ধাবিত হচ্ছে।’ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সিতাংশু বিকাশ আচার্য্য বলেন, ‘অপরাধের বিচার দ্রুত করা না হলে অপরাধ বাড়তে থাকে। এ জন্য প্রশাসন এবং সচেতন নাগরিকদের আরো সতর্ক থাকতে হবে।’ মাসিক রিপোর্ট পর্যালোচনা করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) শাহজাহান মিয়া বলেন, ‘মে মাসের তুলনায় জুনে মাত্র ২০টি অপরাধ বেশি সংঘটিত হয়েছে। চাঞ্চল্যকর ঘটনাগুলোর তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এসএম আশরাফুল আলম ধর্ষণ, শিক্ষক কর্তৃক ছাত্রী হয়রানি বিষয়ে বলেন- ‘এগুলো একটি গ্রুপে করছে এমন না। আলাদা আলাদাভাবে ঘটছে। তারপরও পুলিশ পদক্ষেপ নিচ্ছে। তবে একমাত্র সামজিক সচেতনতাই পারে এ সব অপরাধ কমিয়ে আনতে।’

সর্বশেষ খবর