চুয়াডাঙ্গায় কয়েক বছর ধরে গম আবাদ বন্ধ। এ অবস্থায় চলতি বছর সরকারিভাবে গম সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ নিয়ে বিপাকে পড়েছে জেলা খাদ্য অধিদফতর। চলতি বছর জেলায় ৭০ টন গম সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও মিলছে না এক ছটাক। খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তারা কৃষকের বাড়ি বাড়ি গিয়েও গমের দেখা পাচ্ছেন না।
জেলা খাদ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, কয়েক বছর আগে চুয়াডাঙ্গাসহ আশপাশের জেলার গমে নেক-ব্লাস্ট রোগ দেখা দেয়। এ রোগ দমন করতে না পেরে গম আবাদে কৃষকদের নিরুৎসাহিত করতে থাকেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। ফলে কৃষকরা গম চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। চুয়াডাঙ্গা খাদ্য অধিদফর জানায়, চলতি বছর জেলা থেকে এক হাজার ৪৯৪ টন ধান, ছয় হাজার ৪৯০ টন চাল ও ৭০ টন গম সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। স্থানীয় খাদ্য অধিদফতরের মাধ্যমে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান, চাল ও গম সংগ্রহের নির্দেশনা রয়েছে। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক রেজাউল করিম বলেন, ‘সরকার থেকে ধান, চালের পাশাপাশি গম সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও কৃষকদের বাড়ি বাড়ি ঘুরেও গম পাচ্ছি না।’ সদর উপজেলার বেলাগছি গ্রামের কৃষক আব্দুল কাদের জানান, কয়েক বছর ধরে নেক ব্লাস্টের কারণে ক্ষতি এড়াতে গম চাষ করছেন না তারা। তাছাড়া এ জেলায় গম আবাদে সরকারের নিষেধাজ্ঞাও রয়েছে। আলমডাঙ্গার কৃষক কফিল উদ্দীন জানান, বছর পাঁচেক আগেও তারা প্রচুর গম আবাদ করতেন। নেক ব্লাস্টের আক্রমণের পর থেকে গম চাষ না করার জন্য বলা হয় তাদের। সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তালহা জুবাইর মাশরুর বলেন, ‘ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা না করে উল্টো গম চাষে নিরুৎসাহিত করার মাশুল গুনতে হচ্ছে চাষি ও খাদ্য বিভাগকে। চুয়াডাঙ্গায় গমের স্বর্ণযুগ ফেরাতে হলে দ্রুত ব্লাস্ট সহনশীল ভিন্ন জাতের বীজ ছড়িয়ে দিতে হবে।’ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আলী হাসান জানান, ২০১৬ সালে চুয়াডাঙ্গায় গমে ভয়াবহ বালাই নেক ব্লাস্টের আক্রমণে মাঠেই গমগাছ পুড়িয়ে ফেলে কৃষক। ওই জমিতে উৎপাদিত অন্য ফসলেও যাতে এ রোগ আক্রমণ করতে না পারে সে জন্য গম চাষে কৃষকদের নিরুৎসাহিত করা হয়।