রবিবার, ১৪ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

হারিয়ে যাচ্ছে মাদারীপুরের বানর

দেখা দিয়েছে আবাসস্থল ও খাদ্য সংকট ইকোপার্ক থাকলেও ব্যবহার হচ্ছে না

বেলাল রিজভী, মাদারীপুর

হারিয়ে যাচ্ছে মাদারীপুরের বানর

হারিয়ে যাচ্ছে মাদারীপুরের চরমুগরিয়ার ঐতিহ্যবাহী বানর। বনজ ও ফলদ গাছ কমে যাওয়া এবং বসতবাড়ি বেড়ে যাওয়ায় ধংস হচ্ছে বানরের আবাসস্থল। একই সঙ্গে দেখা দিয়েছে তীব্র খাদ্য সংকট। এদিকে বানরের জন্য কুমার নদের তীরে নয়াচর এলাকায় ১৮ একর জায়গাজুড়ে ইকোপার্ক নির্মাণ করা হলেও বানরগুলো আজও সেখানে নেওয়া সম্ভব হয়নি।

জেলা বন বিভাগ বলছে, চরমুগরিয়া ইকোপার্ক আধুনিকায়নে বরাদ্দ দেয়ে মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। অর্থ বরাদ্দ পেলে ইকোপার্কের অবকাঠামো নির্মাণ ও বানরের খাবারের উপযোগী গাছ (কাঁঠাল, পেয়ারা, আম, ডুমুর) রোপণ করা হবে। যাতে বানরের খাদ্য সংকট পূরণ হয়। জেলা বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তাপস কুমার বলেন, ‘বানরের জন্য বরাদ্দের দাবি জানিয়ে আবেদন করা হয়েছে। যথাসাধ্য চেষ্টা করছি-অর্থ বরাদ্দ হলে বানরের খাবার সংকট থাকবে না। স্থানীয় সূত্র জানায়, আড়িয়াল খাঁ নদীবেষ্টিত মাদারীপুরের চরমুগরিয়া অঞ্চল বনজ ও ফলদ গাছে পূর্ণ ছিল। মুক্তিযুদ্ধের আগে এ বনে ১০ হাজারের মতো বানর ছিল। তখন জঙ্গল ও শত শত গাছ থাকায় বানরগুলোর বিচারণ ছিল চরমুগরিয়ার এলাকাজুড়ে। বর্তমানে কমিউনিটি সেন্টার, আদমজী পাট ক্রয় কেন্দ্র ও চৌরাস্তার স্বর্ণকারপট্টি কিছু বানর দেখা যায়। এর সংখা ছোট-বড় মিলিয়ে ৫০০ থেকে এক হাজার হতে পারে বলে ধারনা এলাকাবাসীর। যদিও জেলা বন বিভাগ বলছে, চরমুগরিয়ায় এখনও আড়াই হাজারের মতো বানর আছে। স্বর্ণকারপট্টির একাধিক বাসিন্দা জানান, গাছপালা না থাকায় ও বসতবাড়ি বেড়ে যাওয়ায় বানর বসবাসের আগের পরিবেশ নেই। দিনে দিনে চরমুগরিয়ায় বানরের সংখ্যা কমছে। প্রাকৃতিকভাবে খাবারের যোগান কমে যাওয়ায় বানরগুলো দর্শনার্থী ও মানুষের দেওয়া যৎসামান্য খাবার খেয়ে কোনোমতে বেঁচে আছে। তাছাড়া খাবার ও আশ্রয়ের জায়গা না পেয়ে বানর মাদারীপুর শহরসহ বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়েছে। এখনই পুনর্বাসন করা না হলে চরমুুগরিয়ায় বানর খুঁজে পাওয়া কঠিন হবে।

সরেজমিনে দেখা যায়, চরমুগরিয়ার চৌরাস্তা মোড়ের স্বর্ণকারপট্টির বাড়ির ছাদ, বিদ্যুতের তার ও দোকানঘরের টিনের চালার উপরে বানর বসে আছে। খাদ্যের অভাবে বানরগুলো দুর্র্বল হয়ে জীর্ণশীর্ণ হয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা ও দর্শনার্থীরা পাউরুটি, বিস্কুট, কলা, বাদাম ও মুড়ি ছিটিয়ে খাওয়ানোর চেষ্টা করছে।

সর্বশেষ খবর