মঙ্গলবার, ১৬ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

যমুনার ভাঙনে সর্বস্বান্ত মানুষ

আব্দুস সামাদ সায়েম, সিরাজগঞ্জ

যমুনার ভাঙনে সর্বস্বান্ত মানুষ

অবৈধ বালু উত্তোলনের ফলে প্রতিদিন যমুনার ভাঙনে বসতভিটা-ফসলি জমি বিলীন হচ্ছে। নিঃস্ব ও সর্বস্বান্ত হয়ে পড়ছে নদী তীরবর্তী মানুষ। ভাঙনকবলিতরা খোলা আকাশ ও অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহম্মদ ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার সরকার রায়হান ও সহকারী কমিশনার ভুমি আনিছুর রহমান জানান, বালু ব্যবসায়ীদের নির্দিষ্ট মহাল ইজারা দেওয়া হয়েছে। এর বাইরে বালু উত্তোলনে জনবসতি হুমকির মুখে পড়লে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম জানান, জরুরি ভিত্তিতে ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে জিওব্যাগ ফেলা হয়েছে। যেসব এলাকায় ভাঙন বেশি, সেসব এলাকায় জিওব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধ করা হবে। এছাড়াও কাজিপুর ও এনায়েতপুরে স্থায়ী সংরক্ষণ বাঁধের জন্য ১ হাজার ২০০ কোটি টাকার প্রকল্প জমা দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পগুলো পাস হওয়ার পর শুষ্ক মৌসুমে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা হবে। জানা যায়, গত চারমাস ধরে যমুনা নদীর কয়েকটি পয়েন্টে ভাঙন শুরু হয়েছে। বর্তমানে আরো তীব্র হয়েছে। কাজিপুর উপজেলার খুদবান্ধি থেকে শুভগাছা পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার এলাকায় ভাঙন শুরু হয়েছে। একমাসের ব্যবধানে দেড়শতাধিক বসতভিটা, গাছপালা, বৈদ্যুতিক খুঁটি বিলীন হয়ে গেছে। আট থেকে দশটি গ্রাম হুমকিতে রয়েছে। এনায়েতপুরের ব্রাহ্মন গ্রাম থেকে পাঁচিল পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার এলাকায় ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। চৌহালীর খাসপুকুরিয়া পাঁচ কিলোমিটার এলাকায় ভাঙন শুরু হয়েছে। এনায়েতপুরের ব্রাহ্মন গ্রামে আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে জিওব্যাগ ফেলে ৫০০ মিটার এলাকা সংরক্ষণ করলেও সম্প্রতি ৫০ মিটার ধসে গেছে। শাহজাদপুরের কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত রাউতারা বাঁধ ভেঙে গেছে। শাহজাদপুর উপজেলার প্রায় চারটি পয়েন্টে ভাঙন শুরু হয়েছে। এছাড়া অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে সদর উপজেলার কাওয়াকোলা ইউনিয়নের কাওয়াকোলা ও হাট বয়ড়া গ্রামের দুই শতাধিক বসতভিটাসহ ফসলি জমি বিলীন হয়ে গেছে। এই ভাঙনকবলিতরা ঘরগুলো স্তূপ করে রেখে খোলা আকাশ বা অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। এনায়েতপুর গ্রামের আড়কান্দি গ্রামের একাধিক বাসিন্দা জানান, আল্লাহ ছাড়া আমাদের সাহায্য করার নেই। কাওয়াকোলা ইউনিয়নের বাসিন্দারা জানান, একদিকে পানি বৃদ্ধি অন্যদিকে তীর ঘেঁষে বালু উত্তোলনের কারণে প্রতিদিন চোখের সামনে ফসলি জমি নদী গর্ভে চলে যাচ্ছে।

 

 

সর্বশেষ খবর