শুক্রবার, ২৬ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

ভূমিবিরোধে আদিবাসী পরিবার নিরাপত্তাহীনতায়

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি

মানিকগঞ্জের ঘিওরের আদিবাসী অধীরচন্দ্র সরকার তার পরিবার-পরিজন নিয়ে আতঙ্কে রয়েছেন। কিছুদিন আগে তার বাড়িঘর ভেঙে দেওয়া হয়েছে। যে কোনো সময় আবার তাদের ওপর হামলা হতে পারে এ আশঙ্কায় তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। অন্ধ অধির চন্দ্র সরকার জানান, ৯২ সালের ২১ ডিসেম্বর  স্থানীয় আবু রায়হানের দুই শতাংশ ভূমির পরিবর্তে আমার পাঁচ শতাংশ ভূমি এওয়াজ নামা দলিল হয়। কিন্তু তিনি ভূমির ফয়সালা না করে টালবাহানা করতে থাকেন। এ কারণে তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করি। মামলা আদালতে চলমান রয়েছে। এর মধ্যে গত ২৩ এপ্রিল আবু রায়হানের পক্ষে আদালতের রায় আছে বলে মামলার বিবাদীপক্ষের আইনজীবী শামসুল আলম ওই জমি ক্রয় করেছেন দাবি করে নয় শতাংশ ভূমির ঘরবাড়ি ভেঙে ফেলে। এর ফলে পরিবারের লোকজন নিয়ে আমরা মানবেতর জীবনযাপন করছি।

অধীরচন্দ্র সরকারের স্ত্রী রাসিয়া সরকার বলেন, আমাদের কোনো নোটিস দেয়নি। ঘর থেকে কোনো মালামাল বের করতে দেওয়া হযনি। তিনি আরও বলেন, মামলা রয়েছে পাঁচ শতাংশ ভূমি নিয়ে কিন্তু কেন নয় শতাংশ জায়গার ঘর ভাঙা হলো। এর ক্ষতিপূরণ কে দেবে? এ ছাড়া আইনজীবীর লোকজন প্রতিনিয়ত আমাদের  হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে। এ অবস্থায় আমরা চরম আতঙ্ক ও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। জিতেনের আরেক প্রতিবেশী সৈয়দ এনামুল হুদা জানান, অধীর চন্দ্রের বসতবাড়ির সঙ্গে আমারও বসতভিটা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেশী সুলতানা আক্তার সোমা বলেন, আদিবাসী মানুষের ঘরবাড়ি অল্প সময়ের মধ্যে ভেঙে দেওয়া হলো। যেহেতু জায়গাটি নিয়ে মামলা চলছে মামলার চূড়ান্ত রায় যার পক্ষে যাবে সেই জায়গা পাবে। আবু রায়হানের পক্ষের আইনজীবী মো. সামসুল হক বলেন, কোর্টের লোকজন ৫ শতাংশ জায়গা উদ্ধার করেছে। এর বেশি ভাঙা হয়নি।

বাংলাদেশ সমতল আদিবাসী নেতা সিপন সিং জানান, ১৯৫০ সালের প্রজাতন্ত্র আইন অনুযায়ী ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের (আদিবাসী) জমিজমা ক্রয়-বিক্রি, এওয়াজ বদল বা হস্তান্তর করতে হলে সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা প্রশাসকের অনুমতি নিতে হবে। এ আইন এখনো বলবদ রয়েছে। এ অবস্থায় অধীরচন্দ্রের জমি এওয়াজ বদল কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। সম্পূর্ণ চিটিং করে এ কাজ করা হয়েছে।

তিনি অবিলম্বে অধীরচন্দ্রের জমি ফেরতসহ বসতভিটা ভেঙে দেওয়ার ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

সর্বশেষ খবর