বুধবার, ৩১ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

উন্নয়নের মূল স্রোতধারায় সাবেক ছিটের মানুষ

ছিটমহল বিনিময়ের চার বছর

সরকার হায়দার, পঞ্চগড়

৩১ জুলাই (আজ) পূর্ণ হচ্ছে ছিটমহল বিনিময় চুক্তি বাস্তবায়নের চার বছর। অল্প এ সময়ের মধ্যে পঞ্চগড়ের বিলুপ্ত ৩৬টি ছিটমহলে এসেছে অভূতপূর্ব পরিবর্তন। উন্নয়নের মূল স্রোতধারায় যুক্ত হয়েছে সাবেক ছিটের মানুষ। ৬৮ বছরের বঞ্চিত মানুষের জন্য সরকারি উদ্যোগে নির্মাণ করা হয়েছে গোরস্থান থেকে বসতবাড়ি। ঘরে ঘরে জ্বলছে বৈদ্যুতিক বাতি। গড়ে উঠেছে নতুন নতুন স্কুল-কলেজ। প্রতিটি পরিবার ব্যবহার করছে স্যানিটারি ল্যাট্রিন, নলকূপ। এখন সাবেক ছিটের শিশুরা দল বেঁধে স্কুলে যাচ্ছে। বেকার তরুণ-তরুণীরা শিখছে কম্পিউটার। অনেকে আউট সোর্সিংয়ে যুক্ত হয়ে আয়ও করছে। পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘দীর্ঘদিনের পিছিয়ে পড়া এ জনগোষ্ঠীকে মূল স্রোতের সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত করতে সরকারের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। সরকারের সব ধরনের উন্নয়ন কার্যক্রম অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ধারাবাহিকভাবে এখানে সম্পন্ন হচ্ছে। আগামীতে আরও উন্নয়ন হবে।’ জানা গেছে, পঞ্চগড়ের ৩৬টি ছিটমহলের প্রায় ২০ হাজার মানুষের জন্য সরকারি উদ্যোগে গত চার বছরে ঘরে ঘরে বিনামূল্যে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। শিক্ষাবিস্তারে তিনটি কলেজসহ ২২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন করা হয়েছে। গড়ে উঠেছে তিনটি কমিউনিটি ক্লিনিক এবং ভূমিহীন ৮৫টি পরিবারের জন্য তিনটি গুচ্ছগ্রাম। নির্মিত হয়েছে মন্দির-মসজিদ। কৃষি ও সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ভ্রাম্যমাণ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সহায়তায় প্রতি সপ্তাহে দেওয়া হচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা। ইতিমধ্যে জমির মালিকানা হস্তান্তর করা হয়েছে। নাগরিকদের দেওয়া হয়েছে স্মার্ট কার্ড। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে ৬৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে ১০২ কিলোমিটার রাস্তা। গড়ে তোলা হয়েছে ডিজিটাল পোস্ট অফিস। বয়স্ক এবং বিধবারা পাচ্ছেন মাসিক ভাতা। বেকার ও স্কুল কলেজগামী শিক্ষার্থীদের দেওয়া হচ্ছে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ। ছিটমহল আন্দোলনের সাবেক নেতা মফিজার রহমান জানান, ‘দীর্ঘ বঞ্চনা শেষে আমরা আলোর মুখ দেখেছি।’

সর্বশেষ খবর