রাজস্ব আদায়ে গতি আনতে এবং প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে বাণিজ্য সম্প্রসারণের লক্ষ্যে যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরে কার্গো ভেহিকেল টার্মিনাল নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ জন্য প্রকল্প হাতে নিয়েছে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়। খরচ ধরা হয়েছে ২৮৯ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক কর্মকর্তা জানান, প্রকল্পের প্রস্তাব পাওয়ার পর চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারি প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা হয়। ডিপিপিটি এখন জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির-একনেক সভায় উপস্থাপন করা হবে। অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে ২০২১ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ। বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বলেন, ‘দেশের অর্থনীতিতে বেনাপোল বন্দরের ভূমিকা অপরিসীম। এ বন্দরে বাণিজ্য আরও গতিশীল করতে আন্তরিক ভারত-বাংলাদেশ সরকার। তার ধারাবাহিকতায় ইতিমধ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ভারত-বাংলাদেশ-নেপাল-ভুটান চার দেশের বাণিজ্য চুক্তিও বাস্তবায়ন হয়েছে। কিন্তু বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানির ক্ষেত্রে অবকাঠামোগত সমস্যায় ব্যবসায়ীরা যথাযথ সুফল পাচ্ছে না। সরকার প্রয়োজনীয় অবকাঠামোগত উন্নয়ন করলে দ্বিগুণ রাজস্ব আদায় হবে। বেনাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবির বলেন, প্রকল্পটি একনেক সভায় অনুমোদন হলে দ্রুত বাস্তবায়ন করবে স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ। ফলে বন্দরে যানজট কমে আসবে। গতি আসবে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে।
ভারত সীমান্তে স্থলপথে বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বেনাপোল বন্দর খুবই গুরুত্বপুর্ণ। এ বন্দর ব্যবহার করে স্থলপথের প্রায় ৮০ শতাংশ আমদানি-রপ্তানি হয়ে থাকে। প্রতি বছর বেনাপোল দিয়ে পণ্য আমদানি-রপ্তানির পরিমাণ প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা। এখান থেকে বছরে প্রত্যক্ষভাবে সরকারের প্রায় ৫ হাজার কোটি। প্রতিদিন ৪০০-৫০০ ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাক এবং ৫০০-৬০০ বাংলাদেশি ট্রাক এ বন্দরে আসে। টার্মিনালটি নির্মাণ করা হলে প্রায় এক হাজার ২৫০টি যান পার্কিং সম্ভব হবে। প্রকল্পের আওতায় ২৯ দশমিক ১০ একর জমি অধিগ্রহণ, এক লাখ ৪৭ হাজার বর্গমিটার পার্কিং ইয়ার্ড, এক হাজার ৭৪৭ বর্গমিটার ভবন নির্মাণ, সিকিউরিটি সিস্টেম, চারটি ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণ করা হবে।
