সোমবার, ১৯ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

ধর্ষণের পর হত্যার শিকার হন জয়ন্তী চক্রবর্তী

চাঁদপুর প্রতিনিধি

ধর্ষণের পর হত্যার শিকার হন জয়ন্তী চক্রবর্তী

চাঁদপুর শহরের ষোলঘর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা জয়ন্তী চক্রবর্তীকে ডিস লাইনম্যান জামাল হোসেন ও মালিক আনিছুর রহমান পালাক্রমে ধর্ষণের পর হত্যার স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। গতকাল শহরের ওয়ারলেছ মোড়ে পিবিআই চাঁদপুর জেলা কার্যালয়ে প্রেস বিফ্রিং করে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। পিবিআই চট্টগ্রাম বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. ইকবাল চাঞ্চল্যকর শিক্ষিকা হত্যার রহস্য তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন। পুলিশ জানায়, গত ২১ জুলাই দুপুরে শহরের ষোলঘর পানি উন্নয়ন বোর্ডের স্টাফ কোয়ার্টারে সপরিবারে বসবাসকারী পানি উন্নয়ন বোর্ডের হিসাব সহকারী অলোক গোস্বামী’র স্ত্রী শিক্ষিকা জয়ন্তী চক্রবর্তীকে (৪৫) ডিস লাইনম্যান জামাল হোসেন ও মালিক আনিছুর রহমান ধর্ষণের পর ঘরে থাকা ধারালো চুরি দিয়ে হত্যা করে। এই ঘটনায় পরদিন শিক্ষিকার স্বামী অলোক গোস্বামী চাঁদপুর মডেল থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। গত ৪ আগস্ট ঘটনাটি চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলা হিসেবে তদন্ত কার্যক্রম পিবিআই কর্তৃক অধিগ্রহণ করা হয়। পিবিআই পরিদর্শক মো. কবির আহমেদের নেতৃত্বে চাঁদপুরের একটি টিম গ্রেফতারকৃত আসামিদের আদালতের অনুমতিক্রমে দুদিনের রিমান্ডে এনে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে জামাল ঘটনায় তার সক্রিয় সম্পৃক্ততার বিস্তারিত বর্ণনা দেয়।

পুলিশ সুপার মো. ইকবাল হোসেন আসামি জামালের দেওয়া জবানবন্দির বরাত দিয়ে বলেন, ঘটনার দিন দুপুরে আনুমানিক ১২টার দিকে আনিছুর রহমান ও জামাল পাউবো’র ভিতরে পরিত্যক্ত ঘরে এসে দুজনে ইয়াবা সেবন করে। তারপর তারা জয়ন্তী চক্রবর্তীর বাসায় যায়। নিচতলার সানশেডে উঠে জামাল ডিসের লাইন নাড়াচাড়া করলে জয়ন্তীর টিভি দেখায় সমস্যা দেখা দেয়। তখন তিনি বারান্দায় বেরিয়ে এসে অভিযুক্তদের টিভি দেখতে সমস্যা হচ্ছে বলে জানালে তারা কৌশলে বাসায় প্রবেশ করার জন্য লাইন ঠিক করার কথা বলে বাসার নিচের গেইটের চাবি নিচে ফেলতে বলে। জয়ন্তী চক্রবর্তী সরল বিশ্বাসে চাবি নিচে ফেললে প্রথমে আনিছ ও পরে জামাল বাসায় ঢুকে।

জয়ন্তীকে একা পেয়ে ধর্ষণের উদ্দেশ্যে আনিছ ধস্তাধস্তি শুরু করে। পরে জামালও ঘরে প্রবেশ করে দুজনে মিলে টানাহেঁচড়া শুরু করে। এক পর্যায়ে জয়ন্তী মেঝেতে পড়ে গেলে দুজনে জাপটে ধরে একে অন্যের সহায়তায় মুখ চেপে ধরে প্রথমে আনিছ ও পরে জামাল পালাক্রমে জয়ন্তীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে।

ধর্ষণের পর জয়ন্তী হুমকি দেয় যে, এই ঘটনা লোকজনদেরকে বলে দিবে। তখন তারা দুজনে ক্ষিপ্ত হয়ে পুনরায় জাপটে ধরে ঘরের র‌্যাকে থাকা ধারালো ছুরি দিয়ে জামাল জয়ন্তীর গলাকেটে হত্যা করে। পরে আনিছ বাথরুম থেকে মগে করে পানি এনে রক্তমাখা ছুরিটি মরদেহের উপর ধুয়ে ধর্ষণের আলামত বিনষ্টের উদ্দেশ্যে মরদেহের নিম্নাঙ্গের উপর পানি ঢালে এবং ছুরিটি পূর্বের স্থানে রেখে দেয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন পিবিআই চাঁদপুর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শংকর কুমার দাসসহ অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তাবৃন্দ।

 

সর্বশেষ খবর