মঙ্গলবার, ২০ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে আমনে ব্যস্ত কৃষক

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া

বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে আমনে ব্যস্ত কৃষক

বগুড়ার সোনাতলায় কৃষকরা বন্যার ক্ষতি কাটিতে উঠতে আমন চাষে মাঠে নেমেছেন। বৃষ্টি ও বন্যার পানিতে ভর করে চাষ প্রায় শেষ করেছেন উপজেলার আমন চাষিরা। চারা সংকট থাকার পরেও এবার রেকর্ড পরিমাণ জমিতে আমন ধান রোপণের প্রস্তুতি চলছে চাষিদের। বগুড়া জেলার সর্ব উত্তরে জেলা সদর থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে সোনাতলা উপজেলার অবস্থান। যমুনা ও বাঙালি নদী ওই উপজেলাকে ঘিরে রেখেছে। প্রতিনিয়ত প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই-সংগ্রাম করে টিকে থাকতে হয় ওই উপজেলার প্রায় ১ লাখ ৯৩ হাজার মানুষকে। ওই উপজেলার প্রায় ৮৫ ভাগ মানুষ কৃষি কাজের ওপর নির্ভরশীল। কৃষি কাজ করে যাদের অধিকাংশ পরিবার পরিজন নিয়ে সংসার নামের ঘানি টেনে চলছেন। এবারের ভয়াবহ বন্যায় বর্ষালী ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বর্ষার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে ওই উপজেলার কৃষকরা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন। তারা আবার কোমর বেঁধে আমন ধান রোপণে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। সোনাতলা উপজেলার বালুয়াহাট, কর্পূর, মহিচরণ, ভেলুরপাড়া, সৈয়দ আহম্মদ কলেজ স্টেশন, চরপাড়া, করমজা, ঠাকুরপাড়া, গোসাইবাড়ী, কোড়াডাঙ্গা, পোড়াপাইকর, উত্তর করমজা, হরিখালী, হাঁসরাজ, মধুপুর, হুয়াকুয়া, পাকুল্লা, শ্যামপুর এলাকার চাষিদের কেউ কেউ বৃষ্টির পানি আবার কেউ জমিতে শ্যালো মেশিন বসিয়ে পানি সেচের মাধ্যমে আমন ধান রোপণ করছেন। প্রতিবিঘা জমি ১২শ থেকে ১৪শ টাকায় পাওয়ার টিলার দিয়ে চাষ করছেন। আবার শ্যালো মেশিন কিংবা গভীর নলকূপ মালিকদের প্রতিবিঘা ৮শ থেকে হাজার টাকায় সেচ ও ২ হাজার থেকে ২২শ টাকা বিঘায় ধান রোপণ করছে। এ ছাড়া বন্যার পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে ওই উপজেলার দুটি ইউনিয়নের ছয়টি চরের বাসিন্দারা গাঞ্জিয়া ধান রোপণে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। আবার কিছু কিছু এলাকায় দ্বিগুণ মজুরি দিয়ে শ্রমিক সংগ্রহ করে ধান রোপণ করা হচ্ছে। অপরদিকে বন্যায় ধানের বীজতলার ক্ষতি হওয়ায় ধানের চারার সংকট লক্ষ্য করা গেছে। উপজেলার বিভিন্ন হাটে বাজারে ধানের চারা প্রতিমণ ৫শ থেকে ৬শ টাকায় বেচা-বিক্রি হচ্ছে। সোনাতলার হাটকরমজা এলাকার আবদুল করিম মাস্টার, তেকানী এলাকার জাহিদুল ইসলাম, বালুয়াহাট এলাকার আবদুল আজিজ মন্ডল, কর্পূর এলাকার ইব্রাহিম মিয়া, মহিচরণ এলাকার ইব্রাহিম খলিল জানান, অল্প সময়ে এবং অল্প খরচে এ ধানটি ঘরে তোলা সম্ভব। ফলনও হয় বেশ ভালো। উৎপাদন খরচ কম, লাভ বেশি। বগুড়ার সোনাতলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাসুদ আহমেদ জানান, বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার প্রায় ৮৫ ভাগ মানুষ সরাসরি কৃষি কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত। চলতি বছর ওই উপজেলায় সাড়ে ৯ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৭০ ভাগ ধান রোপণ করা হয়েছে। বন্যার পর জমিতে পলি জমায় ওই ধানের জমিগুলোতে রাসায়নিক সারের তেমন প্রয়োজন হয় না। ধান রোপণের ১৩০ থেকে ১৪০ দিনের মাথায় কৃষক ধান কর্তন করতে পারে। এ ধান প্রতি বিঘা জমিতে ১৮ থেকে ২২ মণ ধান উৎপন্ন হয়।

সর্বশেষ খবর