বৃহস্পতিবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

সংকটে পাবনার দুগ্ধশিল্প

এস এ আসাদ, পাবনা

সংকটে পাবনার দুগ্ধশিল্প

দুধের ন্যায্যমূল্য দাবিতে খামারিদের মানববন্ধন

গো-খাদ্যের মূল্যবৃদ্ধি ও দুধের ন্যায্যমূল্য না পেয়ে বিপাকে পড়েছেন পাবনার খামারিরা। সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোর বেঁধে দেওয়া সংগ্রহমূল্যে উঠছে না দুধের উৎপাদন খরচ। সংকট কাটাতে খামারি পর্যায়ে সংরক্ষণ ও বিকল্প বিপণন ব্যবস্থা গড়ে তোলার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।

জানা যায়, অষ্টাদশ শতকে স্থানীয় জাতের সঙ্গে ভারতীয় উন্নত জাতের গরুর সংকরায়নে সৃষ্ট পাবনা ব্রিড গরুর মধ্য দিয়ে বৃহত্তর পাবনায় শুরু হয় দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্যের বাণিজ্যিক উৎপাদন। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষক পর্যায়ে দুধের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত ও শহুরে ভোক্তাদের মাঝে নিরাপদ ও সাস্থ্যসম্মত দুধ পৌঁছে দিতে পাশের সিরাজগঞ্জ শাহজাদপুরে বড়াল নদের পাড়ে গড়ে তোলেন সমবায়ভিত্তিক দুগ্ধ শিল্প ‘মিল্ক ভিটা’।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মিল্ক ভিটার তরল দুধ ও দ্গ্ধুজাত পণ্যের বাজার বৃদ্ধিতে বাড়ে দুধ সংগ্রহের পরিমাণ। চাহিদার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এ অঞ্চলে বাড়তে থাকে গো-খামারের সংখ্যা। মিল্ক ভিটা ছাড়াও এখন এ অঞ্চল থেকে দুধ সংগ্রহ করছে প্রাণ, ব্র্যাক, আকিজসহ বেশকিছু দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাতকারী প্রতিষ্ঠান। তবে উৎপাদন বাড়লেও খরচ অনুপাতে দুধের দাম না বাড়ায় সংকটে পড়েছেন খামারিরা। তারা জানান, নানা অজুহাতে কোম্পানিগুলো অনেক সময় দুধ সংগ্রহ বন্ধ রাখে। তখন অবিক্রীত দুধ নিয়ে বিপাকে পড়তে হয়। তাছাড়া সম্প্রতি কিছু প্রতিষ্ঠান দুধ সংগ্রহ কমিয়ে দিয়েছে। ফলে দুধের ন্যায্যমূল্য তো দূরের কথা উৎপাদিত দুধ বিক্রি করতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে প্রান্তিক খামারিদের। পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার খামারি হারুন রশিদ জানান, স্থানীয় খুচরা বাজারে প্রতি লিটার তরল দুধের দাম ৫০-৬০ টাকা। কোম্পানিগুলো ঘনত্ব পরিমাপ করে মানভেদে আমাদের দুধের দাম দেয় লিটারপ্রতি ৩৫ থেকে সর্বোচ্চ ৩৮ টাকা। গরুর খৈল, ভূষিসহ সব ধরনের গো-খাদ্যের দাম বাড়লেও কোম্পানি দুধের সংগ্রহমূল্য বাড়ায়নি। লোকসান গুনতে গুণতে আমরা ঋণে জর্জরিত হয়ে পড়ছি। পাবনা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আল মামুন ম-ল বলেন, ‘এ অঞ্চলে দীর্ঘদিনেও দুধ বিক্রিতে বিকল্প ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। এ কারণে দুধ সংগ্রহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর বেঁধে দেওয়া দামে বিক্রি করা ছাড়া কৃষকের অন্য পথ খোলা নেই।’

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর