শনিবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

ইজিবাইকের দখলে কুষ্টিয়া নাকাল সাধারণ মানুষ

জহুরুল ইসলাম, কুষ্টিয়া

ইজিবাইকের দখলে কুষ্টিয়া নাকাল সাধারণ মানুষ

কুষ্টিয়া শহরবাসীর গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছে ব্যাটারিচালিত অটো রিকশা তথা ইজিবাইক। প্রয়োজনের চেয়ে প্রায় ৪-৫ গুণ  অটো রিকশা চলাচল করে শহরে। এতে প্রতিনিয়ত যানজটের নাকাল হয় মানুষ। কোনোভাবে বাগে আনা যাচ্ছে না ইজিবাইক চালকদের। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী শহরকে যানজটমুক্ত রাখতে বারবার উদ্যোগ নিলেও, রাজনৈতিক নেতাদের অনীহা, সমন্বয়হীনতা ও পৌরসভার অসহযোগিতার কারণে বিষয়টির কোনো সমাধান হচ্ছে না।  পৌরসভা সূত্র জানায়, পৌরসভার লাইসেন্স শাখা থেকে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ১ হাজার ২৪৮ জন শহরে ইজিবাইকের ব্যবসার জন্য ট্রেড লাইসেন্স করেছিল। আর ২০১৮-১৯ অর্থবছরে যোগ হয়েছে আরও হাজারখানেক অটো। সূত্র জানায়, এক বছরের জন্য একটি ইজিবাইককে ভ্যাট ট্যাক্স মিলে ২ হাজার ২৫ টাকা দিয়ে ট্রেড লাইসেন্স করতে দিতে হয়। এরপর লাইসেন্স দেওয়া ইজিবাইকগুলো পৌর এলাকায় চলার অনুমতি পায়। তবে ইজিবাইক চালক পরিষদের হিসাব মতে শহরে অন্তত ৬ থেকে ৭ হাজার ইজিবাইক চলাচল করছে শহরে। ইজিবাইক চালকদের আলাদা সমিতি রয়েছে শহরে। তারা প্রতিদিন এসব ইজিবাইক থেকে ২০ টাকা করে চাঁদা আদায় করে। ইজিবাইক চালক সংগ্রাম পরিষদ কুষ্টিয়া জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আবদুল হামিদ বলেন, তার পরিষদে ২ হাজার ৩৯টি ইজিবাইক আছে, সেগুলো শহরে চলাচল করে। এর বাইরেও আরও ৬ হাজার ইজিবাইক শহরে চলছে, যেগুলো পৌরসভার বাইরে থেকে আসে। এরাই মূলত শহরে যানজট তৈরি করছে। অনেক মালিক ইজিবাইক কিনে পৌরসভায় চাঁদা দিয়ে শহরে চালানোর বৈধতা পেয়ে যান। যাদের বাড়ির অন্য উপজেলায়।’

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, শহরের সবচেয়ে বেশি ইজবাইক জট লাগে তিনটা রুটে। সেগুলো হলো, মজমপুর থেকে এনএস রোড হয়ে বড় বাজার, থানমোড় থেকে মোল্লাতেঘরিয়া ও পলিটেকনিক থেকে কলেজ ও হাসপাতাল মোড় হয়ে সাদ্দাম বাজার পর্যন্ত। এই তিন সড়কে মোট পাঁচ কিলোমিটারে দুই হাজারের বেশি ইজিবাইক চলাচল করে। আমিন ফার্মেসি মোড়, হাসপাতাল মোড় ও কোর্টস্টেশন মোড়ে সকালে ও বিকালে সবেচেয়ে বেশি জট বাঁধে। এ ছাড়া শহরের মাঝে একাধিক স্টেশন ও রেলগেট থাকায় যানজটের মাত্রা দিনদিন ভয়াবহ রূপ ধারণ করছে।

একটি সূত্র জানিয়েছে, পৌর কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনের অতিরিক্ত ইজিবাইক চালানো বন্ধে কোনো উদ্যোগ নেয় না। এ ছাড়া ইজিবাইক ঘিরে একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। শ্রমিক লীগের গুটিকয়েক নেতা বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করেন। এ কারণে রাজনৈতিক নেতারা অবৈধ ইজিবাইকের বিষয়টি জেনেও নিশ্চুপ। তারা ইজিবাইক নিয়ন্ত্রণ হোক এটা চাই না। এ কারণে ইজিবাইক দিনকে দিন বাড়ছে।

কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এসএম তানভীর আরাফাত বলেন, অবৈধ ইজিবাইক শহরের সৌন্দর্য যেমন নষ্ট করছে তেমনি যানজট বাড়াচ্ছে। সব পক্ষ উদ্যোগ নিলে ইজিবাইক নিয়ন্ত্রণ করা খুবই সহজ হতো।

সর্বশেষ খবর