শনিবার, ৫ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা

সিরাজগঞ্জে প্রাথমিক শিক্ষায় সমস্যার শেষ নেই

আবদুস সামাদ সায়েম, সিরাজগঞ্জ

সিরাজগঞ্জে প্রাথমিক শিক্ষায় সমস্যার শেষ নেই

সদর উপজেলার রতনী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঝুঁকিপূর্ণ ভবন -বাংলাদেশ প্রতিদিন

বিদ্যালয় ভবন না থাকা, জরাজীর্ণ ভবনে পাঠদান, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, পাঠ্যবই সংকটসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত সিরাজগঞ্জের প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা। এ অবস্থায় জেলায় শিক্ষার মান নিয়ে সচেতন মহলে প্রশ্ন উঠেছে। সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা। সিরাজগঞ্জের চর কালিদাসগাতী, রতনী, হাড়নী ও জঞ্জালীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গিয়ে দেখা যায়, স্কুলের কক্ষগুলো ভাঙা। ক্লাস করার সময় খসে পড়ছে পলেস্তারা। ঝড়-বৃষ্টি হলে আতঙ্কে ছোটাছুটি করে শিশুরা। বৃষ্টি পড়লেই বই-পোশাক ভিজে যায়। এমন দৃশ্য শুধু এই চারটি স্কুলে নয়, জেলার শতাধিক বিদ্যালয়ের। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় স্কুলভবনগুলো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। আতঙ্ক নিয়ে ক্লাস করতে হচ্ছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। এছাড়া চলতি বছরের বন্যায় কাজিপুর, চৌহালী ও শাহজাদপুর উপজেলার প্রায় আটটি বিদ্যালয় নদীতে বিলীন হয়ে যায়। এ সব স্কুলের শিক্ষার্থীরা ক্লাস করছে ঝুপড়ি ঘর অথবা খোলা আকাশের নিচে। অন্যদিকে, বছরের আট মাস পার হলেও চৌহালীর হাট ঘোড়জান, শেখ চাঁদপুর, রেহাইকাউলিয়া, হুইপাড়া, মুরাদপুর, চরজাজুরিয়া ও চরধীত পশ্চিমপাড়াসহ ১২-১৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা এখনও বিনামূল্যের বই পায়নি। এতে তাদের পড়াশোনার ব্যাঘাত ঘটছে। এ সব স্কুলের শিক্ষকদের অভিযোগ, বার বার শিক্ষা অফিসে ধরনা দিয়েও বই পাওয়া যায়নি। বই না পাওয়ায় শিক্ষার্থীরা ক্লাস করতে চায় না। পড়াশোনাও ঠিকমত করছে না। এছাড়া অনেক বিদ্যালয়ে স্যানিটারি ব্যবস্থা না থাকায় পরিবেশ অস্বাস্থ্যকর হয়ে পড়েছে। বাড়ছে শিশুদের স্বাস্থ্যঝুঁকি। চৌহালীর হাট ঘোড়জান প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইসমাইল হোসেন জানান, তার স্কুলের প্রথম শ্রেণির ৬৮ জন শিক্ষার্থীর কেউ বাংলা বই পায়নি। বছরের শুরুতে শিক্ষা অফিসে যোগাযোগ করেও কাজ হয়নি। বাধ্য হয়ে পুরনো বই জোড়াতালি দিয়ে ক্লাস করতে হচ্ছে। জঞ্জালী পাড়া ও চর কালিদাসগাতী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জানান, টিনশেড ভবনগুলো একেবারে ভাঙা। আতঙ্কে ক্লাস করতে হচ্ছে। এ অবস্থায় স্কুলে ছাত্র-ছাত্রী উপস্থিতি কমছে। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সিদ্দিক মোহাম্মদ ইউসুফ রেজা জানান, ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো মেরামত ও বিলীন হওয়ায় ভবন পুনঃনির্মাণের জন্য মন্ত্রণালয়ে তালিকা পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে সংস্কার বা পুনর্নির্মাণ করা হবে। এছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে ক্লাস করার নিষেধ রয়েছে।

সর্বশেষ খবর