রবিবার, ১৩ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা

পূর্বাঞ্চল রেলপথে নারী অপরাধীদের দৌরাত্ম্য

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

পূর্বাঞ্চল রেলপথে নারী অপরাধীদের দৌরাত্ম্য

ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন -ফাইলফটো

পূর্বাঞ্চল রেলপথের যাত্রীবাহী বিভিন্ন ট্রেনে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অর্ধশত নারী অপরাধী। তাদের সহযোগিতা করছে সংঘবদ্ধ পুরুষ সদস্যরা। ট্রেনে উঠার মুহূর্তে, কামরায় ঠাসাঠাসির ভিড়ে তারা প্রতিনিয়ত যাত্রীদের পকেট ফাঁকা করছে। নারী যাত্রীদের গলা, কান থেকে স্বর্ণালঙ্কার ছিনিয়ে নেওয়া ছাড়াও ব্যাগ কেটে নিয়ে যায় টাকা, মোবাইলসহ মূল্যবান জিনিস। গত ৭ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা চার নারীকে আটক করে। তারা হলেন- নাসিরনগর উপজেলার সোফিয়া, রোকেয়া, নাজমা ও জহুরা। ওইদিন বিকালে আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।জানা যায়, ৫ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশন থেকে ঢাকাগামী আন্ত:নগর মহানগর গোধূলী এক্সপ্রেসে উঠার পরই এক নারী যাত্রীর ভ্যানিটি ব্যাগ কেটে ৬ ভরি সোনা নিয়ে যায়। এ সময় ওই নারীর স্বামীর পকেট থেকে নিয়ে যায় মোবাইল ফোন। ভুক্তভোগী দম্পতি বিষয়টি ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়িতে জানান। এ ঘটনার সূত্রেই আটক করা হয় চার নারীকে। তাদের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ রয়েছে বলে জানান ফাঁড়ির ইনচার্জ। ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে পুলিশ জানায়, এর আগেও সোফিয়া ধরা পড়েছিল। তখন বয়স্ক মহিলা অজুহাত দেখিয়ে ছাড়া পেয়ে যায়। এ ঘটনার দুই দিন আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশন থেকে কুমিল্লাগামী এক যাত্রীর পকেট কেটে ৬০ হাজার টাকা নিয়ে যায় অপরাধ চক্রের সদস্যরা। ২১ আগস্ট মহানগর এক্সপ্রেস ট্রেনে করে ঢাকা যাওয়ার পথে মনিরুজ্জামান পলাশ নামক যাত্রীর পকেট থেকে মোবাইল ফোন খোয়া যায়। নিয়মিত এমন ঘটনার শিকার হচ্ছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াতকারী যাত্রীরা। সূত্র জানায়, নারী অপরাধীরা টার্গেট মতো মালামাল হাতানোর পরই তা পুরুষ সদস্যের হাতে তুলে দেয়। পূর্বাঞ্চলের ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট রেলপথের ব্রাহ্মণবাড়িয়া-কুমিল্লা সীমানায় এ ঘটনা ঘটছে বেশি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশন থেকে বিভিন্ন আন্ত:নগর ট্রেনে আসনের বিপরীতে কয়েকগুণ বেশি যাত্রী যাতায়ত করে। ভিড়ের এই সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে অপরাধীরা। ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ঢাকামুখী ট্রেনে উঠতে যে প্লাটফর্ম ব্যবহার করতে হয় সেখানে নেই পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা। দু-একটি সিসি ক্যামেরা লাগানো হলেও তা দীর্ঘদিন ধরে অচল। প্লাটফর্মে নেই পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা। আখাউড়া রেলওয়ে থানার এক কর্মকর্তা জানান, এ ধরনের অপরাধীর সংখ্যা কত তার কোনো তথ্য নেই। যাত্রীরা মালামাল চুরি হওয়ার পর লিখিত অভিযোগ করেন না। সে কারণে সন্দেহবশত কাউকে ধরলেও অপরাধীরা সহজেই পার পেয়ে যাচ্ছে।

সর্বশেষ খবর