বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা

মধুমতিতে হারিয়ে যাচ্ছে আলফাডাঙ্গা

কামরুজ্জামান সোহেল, ফরিদপুর

মধুমতিতে হারিয়ে যাচ্ছে আলফাডাঙ্গা

আলফাডাঙ্গা উপজেলার ভাঙনকবলিত এলাকা

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় মধুমতি নদীর ভাঙনে দিশাহারা হয়ে পড়েছে চার ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ। গত এক মাসের ভাঙনে বিলীন হয়েছে সরকারি গুচ্ছগ্রামের একাংশ, কয়েকশ ঘরবাড়ি, ফসলি জমি, মসজিদ, মাদ্রাসাসহ নানা স্থাপনা। হুমকিতে আছে বাজার, স্কুল, ঈদগাহ, মসজিদ-মাদ্রাসা। নদীগর্ভে চলে গেছে দুই কিলোমিটার পাকা সড়ক। ভাঙনের তীব্রতা ক্রমেই বেড়ে যাওয়ায় আতঙ্কে দিন কাটছে নদীতীরের মানুষের। নদীভাঙনে সর্বস্বান্ত অনেক পরিবারের আশ্রয় হয়েছে রাস্তায়। সহায়সম্বল হারিয়ে এসব মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছেন। সরেজমিন পাচুরিয়া ইউনিয়নের পাচুরিয়া ঘাট, বাঁশতলা বাজারসহ কয়েকটি গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, সেখানে ভাঙনকবলিত মানুষ তাদের ঘরবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছে। অনেকে বসতবাড়ি সরিয়ে নেওয়ার সময়ই পাননি। কেউ সব হারিয়ে হাউমাউ করে কাঁদছেন। পাচুরিয়া গ্রামের সফিউদ্দিন জানান, বাব-দাদার ভিটে হারানোর পাশাপাশি তাদের স্মৃতিচিহ্ন কবরও চলে গেছে নদীগর্ভে। গৃহবধূ রেহেনা জানান, মাত্র এক ঘণ্টায় তাদের বসতবাড়ি নদীর পেটে চলে গেছে। সামান্য মালামাল ছাড়া কিছুই রক্ষা করতে পারেননি। বর্তমানে ছেলে-মেয়ে নিয়ে রেহেনার ঠাঁই হয়েছে রাস্তার পাশে গোয়ালঘরে। স্থানীয়রা জানান, নদীভাঙনে পাচুরিয়া গ্রামের ৩০ পরিবার একেবারে নিঃস্ব হয়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে নদীভাঙন শুরু হলেও তা প্রতিরোধে উদ্যোগ নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। ভাঙনরোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জোর দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। মধুমতির ভাঙনের বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ফরিদপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ জানান, বর্তমানে বালুর বস্তা ফেলা হচ্ছে। স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জন্য একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি অনুমোদন হলে কাজ শুরু হবে। নদী ভাঙনরোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন জেলা প্রশাসক অতুল সরকার। তিনি বলেন, ভাঙন ঠেকাতে সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে। অসহায় পরিবারগুলোকে সহযোগিতা করা হবে।

 

সর্বশেষ খবর