বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা

নারীসহ পুলিশ কর্মকর্তা আটক

বিয়ের পর মুক্তি

রংপুর প্রতিনিধি

চট্টগ্রাম আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার  কামরুল হাসানকে মঙ্গলবার রাতে রোকসানা পারভীন স্মৃতি নামে এক নারীসহ রংপুর মহানগরীর বনানীপাড়ার একটি বাড়ি থেকে আটক করা হয়েছে। গভীর রাতে ৫১ লাখ ১ হাজার ৫৬ টাকা দেনমোহরে তাদের বিয়ের পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

রংপুর মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রোমানা জামানের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ এই ব্যবস্থা নেয় বলে জানান ওসি আবদুর রশিদ। তিনি বলেন, থানায় জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় তারা স্বামী-স্ত্রী। তাই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। জেলা মহিলা পরিষদ, স্মৃতির পারিবার ও পুলিশ সূত্র বলছে, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মধ্যস্থতায় পরিবারের সম্মতিক্রমে কাজি ডেকে থানার পাশে ‘হোটেল তিলোত্তমা’য় তাদের বিয়ে দেওয়া হয়। রেজিস্ট্রি বইতে দেখা যায় বিয়ে হয়েছে ২১ অক্টোবর ২০১৯।

মিঠাপুকুরের বালারহাটের মৃত তোফাজ্জল হোসেনের মেয়ে স্মৃতি ২০১৫ সালে কারমাইকেল কলেজ থেকে ইংরেজিতে এমএ পাস করেন। মহিলা পরিষদকে তিনি লিখিতভাবে জানিয়েছিলেন, এক বছর আগে কামরুলের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক হয়। কামরুলের বাবা আমজাদ হোসেনের বাড়ি নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম দলিরামপুর মাগুড়া গ্রামে। কামরুল বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে স্মৃতির সঙ্গে গড়ে তোলেন দৈহিক সম্পর্ক। সিওবাজার সরদারপাড়া এলাকায় কামরুল বাড়ি ভাড়া নিয়ে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে স্মৃতির সঙ্গে বাস করতে থাকেন। সাত দিন পর বিষয়টি টের পেয়েই বাড়ির মালিক তাদের বের করে দেন। এরপর কামরুল তিন মাস আগে বনানীপাড়ায় একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে বাড়ির মালিক সিদ্দিক হোসেনকে বলেন, ‘আমার স্ত্রী এখানে থাকবেন। আমি বাইরে চাকরি করি। মাঝে মাঝে আসব।’ এভাবে রাজশাহীতে ট্রেনিংয়ে থাকা অবস্থায় ওই বাসায় এসে স্মৃতির সঙ্গে থাকতেন কামরুল। স্মৃতি বিয়ের জন্য চাপ দিলে তিনি নানা বাহানায় বিষয়টি এড়িয়ে যেতেন।

মহিলা নেত্রী রোমানা জানান, ট্রেনিং শেষে ১২ দিনের ছুটি কাটাতে কামরুল মঙ্গলবার বনানীপাড়ার ওই বাসায় আসেন। এ সময় স্মৃতি তাকে বিয়ের কথা বললে ছয় মাস পরে বিয়ে করা সম্ভব বলে জানান কামরুল। একপর্যায়ে স্মৃতি বাইরে থেকে ফ্ল্যাটে তালা লাগিয়ে দিয়ে মহিলা পরিষদে খবর দেন। তখন এলাকাবাসীর সহযোগিতায় মঙ্গলবার মাগরিবের নামাজের পর অ্যাকশনে যায় পুলিশ।

রোকসানা পারভীন স্মৃতি জানান, সমস্যার প্রতিকারে তিনি মহিলা পরিষদের শরণাপন্ন হয়েছেন। পরিষদের সহযোগিতাতেই কামরুল এবং তার বিয়ে হয়েছে। স্মৃতি বলেন, ‘এখন আমার চাওয়া একটাই, আমি যেন আর কোনোভাবে প্রতারিত না হই।’

সর্বশেষ খবর