সোমবার, ২৮ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা

মেয়েদের সাহসিকতায় বন্ধ হলো বালু উত্তোলন

নওগাঁ প্রতিনিধি

মেয়েদের সাহসিকতায় বন্ধ হলো বালু উত্তোলন

বালু উত্তোলনের ফলে ঝুঁকিতে থাকা বাঁধ

নওগাঁর মহাদেবপুরে আত্রাই নদীর মহিশবাথান ঘাটে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের সিসি ব্লক ধসে পড়ে। এ অবস্থায় গ্রামের মেয়েরা দলবদ্ধ হয়ে ড্রেজার মেশিন কেটে ফেলেন এবং সিসি ব্লক এলাকায় বালু উত্তোলন বন্ধ করে দেন। বিষয়টি এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এ ঘটনায় ড্রেজার মেশিনের শ্রমিক বাদী হয়ে ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছেন। নীতিমালা অনুসারে সেতু, কালভার্ট, বাঁধ, সড়ক-মহাসড়কসহ গুরুত্বপূর্ণ সরকারি-বেসরকারি স্থাপনার এক কিলোমিটারের মধ্যে বালু উত্তোলন করা যাবে না। নদীভাঙন ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ড মহিশবাথান ঘাটে ৫০০ মিটার সিসি ব্লক দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করে। মহিশবাথান ঘাট এলাকা বালুমহাল হিসেবে চিহ্নিত করা হয় বলে জানা গেছে। এ সুযোগে কিছু বালু ব্যবসায়ী সিসি ব্লক এরিয়ার মধ্যে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বালু উত্তোলন করছে। এতে ব্লকে ধস দেখা দিয়েছে। স্থানীয়রা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ রক্ষায় সিসি ব্লক এলাকা থেকে বালু উত্তোলন বন্ধে গত ২০ অক্টোবর জেলা প্রশাসক, ইউএনও ও ওসির কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। মহাদেবপুর থানার এসআই সাইফুল ইসলাম গত বুধবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বালু উত্তোলন করতে নিষেধ করেন। পরদিন আবারও বালু তুলতে থাকলে গ্রামের মেয়েরে একত্র হয়ে ড্রেজার মেশিন কেটে বালু উত্তোলনে প্রতিবাদ জানায়। বিকালে আবারও একটি ড্রেজার মেশিন চালু করলে মহিলারা সেটিও কেটে ফেলে বালু উত্তোলন বন্ধ করে দেয়। এ সময় বলু উত্তোলনে জড়িতদের সঙ্গে তাদের বাকবিত-া হয়। ওইদিন সন্ধ্যায় ড্রেজার শ্রমিক ফরিদ হোসেন চারজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১০-১২ জনের নামে থানায় মামলা করেন। মহাদেবপুর থানার ওসি নজরুল ইসলাম জানান, বালুমহাল দেখভালের বিষয়টি আমার নয়, এটি দেখবেন ইউএনও। আমাকে একটি অনুলিপি দিয়েছে গ্রামবাসী। সেখানে যাতে কোনো বিশৃঙ্খলা না হয় এজন্য একজন অফিসারকে পাঠিয়েছিলাম। ইউএনও মিজানুর রহমান জানান, তিন মাস আগে এলাকাবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে বিষয়টি তদন্তের জন্য এসিল্যান্ডকে পাঠিয়েছিলাম। তিনি প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। বালু উত্তোলনের কারণে সিসি ব্লকের ক্ষতি হচ্ছে না। বর্তমানে যদি কোনো ক্ষতি হয় তাহলে আবারও বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।

সর্বশেষ খবর