বুধবার, ৩০ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা

বিষাক্ত পানিতে হুমকির মুখে জীববৈচিত্র্য

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

বিষাক্ত পানিতে হুমকির মুখে জীববৈচিত্র্য

ভারতের ত্রিপুরার রাজ্যের আগরতলার থেকে নেমে আসছে ছাই রঙের বিষাক্ত দুর্গন্ধ পানি। এ পানি আখাউড়া স্থলবন্দর ঘেঁষা সিএন্ডবি খাল ও জাজি নদী দিয়ে ছড়িয়ে পড়ছে উপজেলার কৃষিজমিসহ তিতাস নদীতে। বিষাক্ত পানি ব্যবহার ও তা শরীরে লেগে কৃষকরা চর্মরোগ ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। নষ্ট হচ্ছে আখাউড়া উপজেলার জীববৈচিত্র্য। এ পানির সঙ্গে ভেসে আসছে মরা বিভিন্ন পশুপাখি। সীমান্ত ঘেঁষা কালিকাপুরের জলিল মিয়া বলেন, এ পানিতে নামলে শরীর চুলকায়। দুর্গন্ধের কারণে রাস্তা দিয়ে হাঁটা যায় না। মশা-মাছির উপদ্রব বেড়ে যায়। একই এলাকার খোরশেদ আলী বলেন, খালের পাশে আমার বাড়ি। দুর্গন্ধের কারণে আত্মীয়-স্বজন আমার বাড়িতে বেড়াতে আসে না। আখাউড়া স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোবারক হোসেন ভূইয়া বলেন, বিষাক্ত দুর্গন্ধ পানির কারণে কাজকর্ম করা যাচ্ছে না। কিছুক্ষণ থাকলেই মাথা ব্যথা শুরু হয়। ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানের কর্মচারিরাও বেশিক্ষণ অফিসে কাজ করতে চান না। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহানা বেগম বলেন, ওই পানিতে রয়েছে অ্যালমুনিয়াম, লেডসহ বিভিন্ন ভারী পদার্থ। এ সব পদার্থ মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর। এ পানি দিয়ে সেচ দেওয়া ঠিক নয়। আখাউড়ার ইউএনও তাহমিনা আক্তার রেইনা বলেন, বর্জ্য মিশ্রিত দুর্গন্ধযুক্ত কালো পানি। এটা পরিবেশের জন্য হুমকি। বিষয়টি আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিভিল সার্জন ডা. শাহ আলম বলেন, ‘দুর্গন্ধযুক্ত কালো পানিতে এলার্জি, চর্ম ও শ্বাসকষ্ট রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। তাছাড়া পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে।’ ২৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল গোলাম কবীর বলেন, পতাকা বৈঠকে দুর্গন্ধযুক্ত ময়লা পানি নিয়ে দফায় দফায় আলোচনা হয়েছে বিএসএফের সঙ্গে। তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ৪০০ মিটার বক্স কালভার্ট নির্মাণ করে দেবে এবং দূষিত পানি শোধন প্লান্টের মাধ্যমে বিশুদ্ধ করে ছাড়বে।

উল্লেখ্য, এলাকাবাসী কলকারখানার বর্জ্য মিশ্রিত দুর্গন্ধযুক্ত কাল পানি প্রবাহ বন্ধের জন্য কয়েক দফা মানবন্ধন করেছেন। উপজেলার সীমান্তবর্তী ১৫ গ্রামের মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকিসহ এলাকায় পরিবেশ বিপর্যয় দেখা দিয়েছে বিষাক্ত পানি আসার কারণে। বিষাক্ত কালো পানি আসার প্রতিবাদে এর আগে ২০১৫ সালের ১৬ নভেম্বর ও ২০১৬ সালের ২৯ এপ্রিল আখাউড়া স্থলবন্দরের শূন্যরেখায় মানববন্ধন করেছিল ১৫টি গ্রামের লোাকজন।

সর্বশেষ খবর