শনিবার, ২ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

ঠাকুরগাঁওয়ের সড়ক মহাসড়কে মৃত্যুফাঁদ

চার বছরে প্রাণহানি শতাধিক

আব্দুল লতিফ লিটু, ঠাকুরগাঁও

ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড় ও দিনাজপুর জেলার সড়ক-মহাসড়কে বাড়ছে দুর্ঘটনার। হতাহত হচ্ছে বহু মানুষ। এই সড়কগুলো যেন মৃত্যুর ফাঁদে পরিণত হয়েছে। মোটরশ্রমিক ও চালকদের অভিযোগ, সড়কে চাঁদাবাজিসহ পুলিশি হয়রানির কারণে দ্রুতগতিতে গাড়ি চলাচল, চালকের বিশ্রামহীন দায়িত্ব পালন ও অবৈধ গাড়ি চলাচল করায় প্রতিদিন ঘটছে এ সব দুর্ঘটনা। ২০১৫ সাল থেকে ১৯ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রাণ হারান ১১০জন। পুলিশ সুপার কার্যালয় ও হাসপাতাল সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করে। জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও সড়ক বিভাগ যৌথভাবে পঞ্চগড়-ঠাকুরগাঁও ও দিনাজপুর মহাসড়কের ৩১ কিলোমিটারে ১৯টি স্পটে ত্রুটি বের করে। ওই স্পটগুলোতে সড়কের দুই পাশে জঙ্গল ও গাছ কাটা, সড়কের ধারে গাছের গুড়ি ও বিদ্যুতের খুঁটি অপসারণ করা, সড়কে বাঁক কমানো. দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকায় গাড়ি গতি কমানোর সিগন্যাল দেওয়া, মহাসড়কে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে দ্রুতগতিতে গাড়ি চালানো প্রবণতা কমানোর সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। অদক্ষ গাড়ি চালকের দক্ষতা বাড়ানো, বিশ্রাম ছাড়া দূরপাল্লার গাড়ি না চালানোর ওপর প্রস্তাবনা আনেন প্রশাসনের কর্তারা।  পুলিশ সুপার মো. মনিরুজ্জামান মনির বলেন, অবৈধ যানবাহন চলাচল বন্ধে আইনে অন্তর্ভুক্তিকরণের পাশাপাশি ট্রাফিক আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তি বাড়ানো প্রয়োজন। ঠাকুরগাঁও সড়ক বিভাগ নির্বাহী প্রকৌশলী মনসুরুল আজিজ বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ট্রাফিক সিগন্যালসহ বিভিন্ন ধরনের প্রতীক শহরের সাইডে লাগানো হচ্ছে। চালক ও পথচারীরা ট্রাফিক আইন মেনে চললেই অনেকাংশ দুর্ঘটনা কমে আসবে বলে মনে করেন তিনি। জেলা প্রশাসক কেএম কামরুজ্জামান সেলিম বলেন, ঠাকুরগাঁওয়ের মহাসড়কে দুর্ঘটনার প্রবণতা বাড়ছে। চালকের দক্ষতা বাড়ানোর পাশাপাশি নিয়ন্ত্রিতভাবে গাড়ি চালানো, ট্রাফিক আইন মেনে চলাসহ ৩১ কিলোমিটার মহাসড়কে দুর্ঘটনাপ্রবণ ১৯টি স্পটের সমস্যা দূর করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ট্রাক চালক হোসন আলী বলেন, পঞ্চগড় থেকে ঢাকা পর্যন্ত মহাসড়কের ৫টি স্থানে পুলিশকে চাঁদা দিতে হয়। এ জন্য অনেকে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিতে দ্রুতগতিতে গাড়ি চালান। বাস চালক আনোয়ার বলেন, যাত্রী উঠানোর জন্য ধীরগতিতে গাড়ি চালায়। সময় শেষ হওয়ার পর  দ্রুতগতিতে চালায়। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। মোটর শ্রমিক হাসান বলেন, দূরপাল্লার গাড়ির চালকদের বিশ্রাম প্রয়োজন। চালকদের ঘুমানোর জন্য মহাসড়কে ব্যবস্থা করা প্রয়োজন এবং বদলি চালক রাখা দরকার। মোটর শ্রমিক নেতারা বলছেন, মহাসড়কে অবৈধ যানবাহনের কারণে বড় গাড়ি চলাচলে ব্যাঘাত হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর