শুক্রবার, ৮ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

হিমাগারে আলু সংরক্ষণ করেও ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক

আব্দুল লতিফ লিটু, ঠাকুরগাঁও

হিমাগারে আলু সংরক্ষণ করেও ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক

ঠাকুরগাঁওয়ের হিমাগারগুলোতে আলু সংরক্ষণ করে বিপাকে পড়ছে চাষিরা। লাভের আশায় সংরক্ষণ করলেও দিন দিন সেগুলো নষ্ট হচ্ছে। বাজার মূল্যের চেয়ে এসব আলু কম দামেই বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন কৃষকরা।

উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁওয়ের কৃষকরা ধান, ভুট্টা, গমসহ অন্যান্য ফসল আবাদের পাশাপাশি আলু উৎপাদনে ভূমিকা রাখছে। জেলার ২টি হিমাগারে সংরক্ষিত ৮৪ কেজির বস্তায় আলু নষ্ট হয়ে পাওয়া যাচ্ছে ৫০-৬০ কেজি। ২০-২৫ কেজি আলু ফেলে দিতে হচ্ছে। আর অন্য হিমাগারগুলোতেও সংরক্ষিত আলু প্রতি বস্তায় নষ্ট হয় ১০-১৫ কেজি পর্যন্ত। আলু সংরক্ষন করে ক্ষতির শিকার হলেও দায় নেয় না হিমাগার কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে ২-৩ টি হিমাগারে সংরক্ষিত গজিয়ে যাওয়া আলু নাম মাত্র মূল্যে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন কৃষকরা। সদর উপজেলার পল্লী বিদ্যুৎ এলাকার চাষি বেলাল হোসেন জানান, আমিসহ আরও তিনজন কৃষক সদর উপজেলার এসবি এগ্রো হিমাগারে ৩০০ বস্তা আলু সংরক্ষণ করি। বিক্রি করার জন্য হিমাগার থেকে বের করি দেখি বস্তায় আলু গজিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। এ অবস্থায় মালিক পক্ষের সঙ্গে কথা বলি। তারা বলেন বিদ্যুৎ সমস্যার কারণে এমন হয়েছে, আমাদের কিছু করার নেই। বিষয়টি লিখিতভাবে কর্তৃপক্ষকে জানালেও ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি। অন্যদিকে সদরের আকচা ইউনিয়নের মোকলেসুর রহমান জানান, গেল মৌসুমে আগস্ট মাসে সদরের আকচা ইউনিয়নের আমানত কোল্ড স্টোরে ২২০ বস্তা আলু সংগ্রহ করি। প্রতি ৮৪ কেজির বস্তায় ১০-১৫ কেজি আলু পচে নষ্ট হয়ে যায়। ক্ষতিপূরণের দাবি করলে তারা বলেন, আলু রাখলে এমন হবেই, করার কিছু নাই। এসবি এগ্রো হিমাগারের হিসাব রক্ষক শান্তুনু মজুমদার জানান, বিদ্যুৎ সমস্যার কারণে ক্ষতি হয়েছে। হাওলাদার হিমাগার লি.-এর নির্বাহী পরিচালক গোলাম সারোয়ার রবিন জানান, মানসম্মত নয় অথবা ময়দার বস্তায় আলু ভরে হিমাগারে রাখায় ক্ষতি হচ্ছে। হিমাদ্রী লিঃ হিমাগার ব্যবস্থাপক এনামুল হক জানান, চলতি মৌসুমে বিদ্যুতের সমস্যা ছিল। সাধ্যমত চেষ্টা করেছি কৃষকের আলু কিভাবে ভাল রাখা যায়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আফতাব হোসেন জানান গেল মৌসুমে ২৪ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে আলু আবাদ হয়। আর এ থেকে ৫ লাখ ২৭ হাজার ৮০০ মে. টন আলু উৎপাদন হয়। আলু সংক্ষণের বিষয়ে যথাযথ তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন। ঠাকুরগাঁও জেলায় আলু সংরক্ষণের জন্য ১৭টি হিমাগার রয়েছে। এসব হিমাগারের ধারণক্ষমতা ১২-২০ হাজার মে. টন।  

সর্বশেষ খবর