শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা
ভয়াল ঘূর্ণিঝড় সিডরের এক যুগ আজ

অরক্ষিত বাঁধে উপকূলে এখনো আতঙ্ক

বরগুনা প্রতিনিধি

অরক্ষিত বাঁধে উপকূলে এখনো আতঙ্ক

বরগুনায় সিডরে ক্ষতিগ্রস্ত একটি বেড়িবাঁধ -বাংলাদেশ প্রতিদিন

প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় সিডরের এক যুগ পূর্ণ হচ্ছে আজ। দীর্ঘদিনেও সিডরে ক্ষতিগ্রস্ত বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ মেরামত না হওয়ায় এখনো আতঙ্কে রয়েছেন উপকূলীয় জেলা বরগুনার ১৩ লাখ মানুষ। প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং অস্বাভাবিক জোয়ারে নদীর পানিতে তলিয়ে যায় ভাঙনকবলিত এলাকার ঘরবাড়ি। ভেসে যায় পুকুরের মাছ। লবণ পানিতে নষ্ট হয় ফসল। স্থানীয়দের দাবি, শুধু বাঁধ মেরামত করলেই হবে না তার আগে ঠেকাতে হবে নদীভাঙন। বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী জেলার ২২টি পোল্ডারে প্রায় এক হাজার কিলোমিটার বাঁধের মধ্যে ঘূর্ণিঝড় সিডর, আইলা, মহাসেনসহ একাধিক প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৬০০ কি.মি.। এর মধ্যে প্রায় ২০০ কিলোমিটার মেরামত সম্পন্ন হয়েছে। কাজ চলছে আরও ৬০ কিলোমিটারে। এখনো মেরামত হয়নি সদর উপজেলার মোল্লারহোরা, ডালভাঙ্গা, আমতলীর বালিয়াতলী, পশরবুনিয়া, তালতলীর তেঁতুলবাড়িয়াসহ ৪৫টি ঝুঁকিপূর্ণ স্থানের অন্তত ৩৮ দশমিক ৫ কিলোমিটার বাঁধ। পাউবোর দাবি, স্থানীয়রা জমি দিতে রাজি না হওয়ায় মেরামত করা সম্ভব হয়নি এসব বাঁধ। স্থানীয়রা বলছেন, সরকারি নিয়মানুযায়ী ক্ষতিপূরণ না দেওয়ার কারণে জমি দিতে রাজি হননি তারা। বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবু হেনা মোস্তফা কামাল টিটু জানান, তার ইউনিয়নের ডালভাঙ্গা, মোল্লার হোড়া এলাকার প্রায় ৫০০ ফুট বাঁধ নিশ্চিহ্ন অবস্থায় আছে। কোনো ধরনের দুর্যোগ হলে এ এলাকার বাসিন্দারা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তালতলী উপজেলার ছোটবগী ইউপি চেয়ারম্যান তৌফিক উজ্জামান তনু বলেন, উপকূলের মানুষকে নিরাপত্তা দিতে চাইলে বেড়িবাঁধ মেরামতের বিকল্প নেই।  বরগুনা পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী কাওসার আহমেদ বলেন, স্থানীয়রা জমি দিয়ে সহযোগিতা না করায় বালিয়াতলী, পশুরবুনিয়া, তেঁতুলবাড়িয়া, মোল্লারহোরা, ডালভাঙ্গা এলাকার বাঁধ মেরামত করা সম্ভব হয়নি। এ এলাকার বাঁধ মেরামতের জন্য দুই বছর আগে বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল- যা গত এপ্রিল মাসে শেষ হয়ে গেছে। বরগুনার জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ বলেন, স্থানীয়রা শুরুর দিকে জমি দিতে না চাইলেও এখন তারা দিতে রাজি। এ ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসন সার্বিক সহযোগিতা করবে। উল্লেখ্য, ২০০৭ সালের ১৫ নভেস্বর ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় সিডরে বরগুনা জেলায় সরকারি হিসাব অনুযায়ী এক হাজার ৩৪৫ জন মানুষের লাশ উদ্ধার করা হয়েছিল। এখনো নিখোঁজ রয়েছে ১৫৬ জন। বেসরকারি হিসাবে নিহতের সংখ্যা প্রায় দুই হাজার।

সর্বশেষ খবর