নাটোরের সাত উপজেলায় চলছে অতিদরিদ্রের কর্মসংস্থান প্রকল্পের ৪০ দিনের কর্মসূচি। সব উপজেলায়ই এ কর্মসূচিতে কমবেশি অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা বড়াইগ্রাম, লালপুর, বাগাতিপাড়া ও গুরুদাসপুরে। এ চার উপজেলায় শ্রমিকদের ভুয়া নাম ব্যবহার করে কর্মসূচির টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে। জেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগসূত্রে জানা যায়, ২০১৯-২০ অর্থবছরে অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ে সাত উপজেলায় ২৫২টি প্রকল্প চলমান রয়েছে। এ সব প্রকল্পে প্রতিদিন ২০০ টাকা মজুরিতে ১১ হাজার ৬৯৪ শ্রমিকের কাজ করার কথা। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৯ কোটি ৩৬ লাখ ৫২ হাজার টাকা। জেলা ও উপজেলা প্রশাসন বলছে, গ্রামীণ অবকাঠামো মেরামতের পাশাপাশি অতিদরিদ্রদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে নেওয়া এ প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়ম হচ্ছে। বেশির ভাগ এলাকায় কাজ না করে ভুয়া শ্রমিকদের নামে তুলে নেওয়া হচ্ছে টাকা। সরেজমিন লালপুরের কদমিচিলান এলাকায় একটি প্রকল্প ঘুরে দেখা যায়, সেখানে গ্রামীণ সড়ক সংস্কার কাজে দৈনিক ২০০ টাকা মজুরিতে ৪১ জন শ্রমিকের কাজ করার কথা। কিন্তু কাজ করছেন মাত্র ১৩ জন। লালপুরের মতো অতিদরিদ্রের এ প্রকল্পে একইচিত্র বড়াইগ্রাম, বাগাতিপাড়া ও গুরুদাসপুরে। বড়াইগ্রামের বর্তমান প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) আব্দুর রাজ্জাক কিছুদিন আগে লালপুরের দায়িত্বে ছিলেন। অভিযোগ আছে, তার দুর্বল তদারকির কারণেই এ সব প্রকল্পে অনিয়ম হচ্ছে। যদিও আব্দুর রাজ্জাক প্রকল্পে অনিয়মের কথা অস্বীকার করেছেন।

নাটোর জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ আব্দুর রাজ্জাক জানান, সরকারের এ প্রকল্পের সঙ্গে জড়িতরাই অনিয়ম করে টাকা আত্মসাৎ করছে। তিনি বলেন-‘ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বার ও গ্রামের প্রভাবশালীরা ভুয়া শ্রমিকদের নাম দিয়ে টাকা তুলে নিচ্ছেন। এতে সরকার যে উদ্দেশ্যে প্রকল্পগুলো পরিচালনা করছে তার বাস্তবায়ন হচ্ছে না।’ জেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা আলাউদ্দিন বলেন, ‘বর্তমানে লালপুর ও বাগাতিপাড়ায় অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন অন্য উপজেলার পিআইও। ফলে প্রকল্পগুলোর তদারকিতে কিছু অনিয়ম হচ্ছে।’ জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ শাহরিয়াজ বলেন, ‘অতিদরিদ্রের জন্য কর্মসংস্থান প্রকল্পের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে অনিয়ম পেয়েছি। অনিয়ম বন্ধের পাশাপাশি কঠোরভাবে প্রকল্প তদারকির জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’